ব্যুরো নিউজ ১১ জুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত অশান্তির ঘটনায় তদন্ত নিয়ে এবার বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য সরকার ও কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর বিক্ষোভ, ছাত্র আহত হওয়া এবং পরবর্তী সময়ে কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থীর উপর পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্ট একাধিকবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের ভার দিয়েছিলেন আইপিএস মুরলীধরের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল বা SIT-কে। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এখন রাজ্য দ্বারস্থ হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে।
চাপে মমতা সরকার
ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের কাছে রাজ্যের সাফ দাবি, SIT এই ধরণের পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত চালাতে পারে না। এক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ ‘আইনের সীমা ছাড়িয়ে গেছে’ বলেই মনে করছে তারা। আদালতে রাজ্য আরও দাবি করে যে, এই তদন্তে SIT-র অংশগ্রহণ আইনত গ্রহণযোগ্য নয় এবং সেই কারণে একে অবৈধ ঘোষণা করা উচিত।
সম্পত্তির ভাগাভাগি না হলে শেষকৃত্য হবে না! মৃতদেহ আগলে চার স্ত্রী ও নয় সন্তান, হতবাক গ্রামবাসীরা
কিন্তু এই যুক্তি খারিজ করেননি আদালত, বরং রাজ্যকে আরও চাপের মুখে ফেলেছেন। ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে এদিন প্রশ্ন তোলে—এই ঘটনায় আদৌ এফআইআর দায়ের হয়েছে কিনা, এবং হলে সেই কপি কোথায়? রাজ্য প্রশাসনের পক্ষে সেদিন আদালতে কোনও এফআইআরের কপি পেশ করা সম্ভব হয়নি। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যকে আগামী ১৭ জুনের মধ্যে এফআইআরের কপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
High Court:সামান্য বেতনে পুলিশেও চুক্তিতে নিয়োগ, দেশে কোথাও নেই, তুলোধোনা হাইকোর্টের
এই ঘটনাকে ঘিরে ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে যাদের থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর—পুলিশের তরফে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ওসি সাথী বারিকের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়ার কথাও উঠেছে। এই অবস্থায় তদন্ত যদি রাজ্য পুলিশের আওতায় থাকে, তাহলে প্রভাবশালী অভিযুক্তদের বিচার কতটা নিরপেক্ষ হবে—সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়া হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ যদি SIT গঠন করে এবং সেই তদন্তে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ মিলেও যায়, তবে সেটিকে আটকে দেওয়ার পেছনে রাজ্যের অবস্থান যে রাজনীতিকভাবে স্পর্শকাতর—তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই মামলার আগামী শুনানি ১৭ জুন। সেই দিন রাজ্যের পক্ষে কী যুক্তি আসে এবং আদালত কী নির্দেশ দেয়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।