ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১২ ফ্রেব্রুয়ারিঃ শনিবার বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে শুভেন্দু অধিকারী যেখানে শেষ করেছিলেন, রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে, ঠিক যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন, জগৎ প্রকাশ নাড্ডা। তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গেছে, অনুব্রত মণ্ডলকে তিহাড় জেলে যেতে হবে, সেখানে কচি পাঠার ঝোল পাওয়া যাবে না। ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর থেকে শনিবার ঠিক এভাবেই, রাজ্যের শাসকদল তথা মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছিলেন, নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর সেই একই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে, রবিবার এইবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেস্টিজ ফাইটের এপিসেন্টার হয়ে ওঠা পূর্ব মেদিনীপুরে হাজির হলেন, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। বাংলায় লিখে আনা বক্তৃতার শুরুতেই, সারদা থেকে গরুপাচার, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে কাটমানি গত কয়েকবছরের যাবতীয় অভিযোগের অস্ত্রে ভর করে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের নীচুতলাকে কার্যত ভোকালটনিক দিলেন, জেপি নাড্ডা।
যদিও জেপি নাড্ডার এই নির্বাচনী সফর আর দলের প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে তাঁর হুঙ্কারকে যথারীতি রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাসে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে তৃণমূল। জেলার বসিয়ান বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি গত বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে, রবিবার সকালেই বলেছেন, এর আগেও বিজেপির অনেক শীর্ষনেতা বাংলায় এসেছেন। কিন্তু তার প্রভাব বিজেপির ভোটবাক্সে পড়েনি।
প্রায় দশবছর পরেও সারদা মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। পাশাপাশি গরু আর বালিপাচার মামলার তদন্ত নেমে অনুব্রত মণ্ডলের মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতাকে জেলবন্দি করেও, বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী দুর্নীতির চূড়ায় থাকা ষড়যন্ত্রীদের হদিশ এখনও পায়নি সিবিআই এবং ইডি। এনিয়ে আদালতে একাধিকবার সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে, কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থাকে। প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্র আর রাজ্যের শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্বের মধ্যে রাজনৈতিক সৌজন্যের কারণেই কি, বঙ্গবিজেপির অভিযোগ দিল্লি তথা তুঘলক রোডের নেতাদের কাছে, তেমন আমল পাচ্ছে না? এমনই এক পরিস্থিতিতে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপির সর্বস্তরের মনোবল চাঙ্গা করতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কী বার্তা দেন, রবিবার সকাল থেকে সেটাই ছিল রাজ্যরাজনীতির সবচেয়ে বড় জল্পনা। আর পূর্ব মেদিনীপুরের প্রকাশ্য জনসভা থেকে খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি এদিন যেভাবে সারদা আর নারদের পাশাপাশি, সাম্প্রতিক নিয়োগ বা আবাসদুর্নীতি নিয়েও বার্তা দিলেন, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা তার একটিই ব্যাখ্যা করছেন। সেটা হল বঙ্গবিজেপির অভিযোগ আর মনোবল, নরেন্দ্র মোদি আর অমিত শাহদের কাছে মোটেই ফেলাফেলার বিষয় নয়। জাহাঙ্গির বাদশার রিপোর্ট, ইভিএম নিউজ, পূর্ব মেদিনীপুর।