ব্যুরো নিউজ ৫ জুন : বিশ্ব যখন ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা নিয়ে চিন্তিত, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নতুন মোড় এনেছেন। বুধবার তিনি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফোনালাপ হয়েছে, যেখানে পুতিন নাকি খুব ‘জোরদার’ ভঙ্গিতে জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনের ‘দুঃসাহসী ড্রোন হামলা’র জবাব দেবে মস্কো। কথোপকথন শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “পুতিন খুব জোরালোভাবে বলেছেন যে, ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জবাব তাকে দিতে হবে।” ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আরও মন্তব্য করেছেন, “এটি একটি ভালো কথোপকথন ছিল, তবে এটি তাৎক্ষণিক শান্তির দিকে নিয়ে যাবে এমন কথোপকথন নয়।” মে মাসের ১৯ তারিখের পর পুতিনের সঙ্গে এটিই ছিল ট্রাম্পের প্রথম পরিচিত ফোন কল, যা এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা করেছেন। মনে হচ্ছে, এক ঘণ্টা ধরে বিশ্বযুদ্ধের হুমকি নিয়ে হালকা চালে আড্ডা দেওয়াই এখন আন্তর্জাতিক কূটনীতির নতুন ধারা!

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে

ইউক্রেনের ‘দাগী’ ড্রোন হামলা: ৪১টি রুশ বিমান ধ্বংস!

স্মরণ করা যেতে পারে, গত রবিবার ইউক্রেন সামরিক ইতিহাসে এক ‘দুঃসাহসী’ ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। রাশিয়ার গভীরে অবস্থিত কৌশলগত বিমান ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে এই হামলায় ৪০টিরও বেশি রুশ বিমান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমান, পরিবহন বিমান এবং আকাশসীমা সতর্কীকরণ বিমান। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবার প্রধান ভাসিল মালিয়ুক, যিনি এই হামলার পরিকল্পনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বলেছেন যে এই জটিল এবং নজিরবিহীন অভিযানটি প্রায় দেড় বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং এটি ছিল “রাশিয়ার সামরিক শক্তির মুখে এক বড় চড়”। তিন ভিন্ন সময় অঞ্চলে একযোগে আঘাত হানা এই হামলা মস্কোর আর্কটিক, সাইবেরিয়া এবং সুদূর প্রাচ্যের অঞ্চলগুলি, অর্থাৎ ইউক্রেন থেকে ৭,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে আঘাত হানে। বোঝা যাচ্ছে, রাশিয়ার সামরিক শক্তিকে ‘চড়’ মারার জন্য ইউক্রেন যথেষ্ট সময় নিয়েই পরিকল্পনা করেছিল!

শান্তি আলোচনা ও মৃতদেহ বিনিময়: যুদ্ধের মাঝে ‘ফ্যাশন শো’?

এদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা তুরস্কে তাদের সর্বশেষ শান্তি আলোচনা শেষ করেছেন, যা মাত্র এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ধরে চলেছিল! ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই খবর নিশ্চিত করেছে। লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলেনস্কি জানান, উভয় পক্ষ “তুর্কি পক্ষের মাধ্যমে নথি বিনিময় করেছে এবং আমরা যুদ্ধবন্দীদের নতুন মুক্তি প্রক্রিয়া প্রস্তুত করছি”। দুই পক্ষ যুদ্ধে নিহত ৬,০০০ সৈন্যের মৃতদেহ বিনিময়েও সম্মত হয়েছে। সপ্তাহান্তে একের পর এক ‘আশ্চর্যজনক’ আক্রমণের পর তিন বছরের পুরনো এই যুদ্ধ অবসানের কোনো বড় সাফল্যের প্রত্যাশা ছিল না। মনে হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির বদলে এখন মৃতদেহ বিনিময়েই শান্তি খোঁজা হচ্ছে – এক নিদারুণ বাস্তবতা!

আলিপুরদুয়ারের জনসভায় মোদীর বার্তা : ‘নির্মম সরকার’কে উপড়ে ফেলে ‘অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ’র ডাক!

কূটনৈতিক মন্তব্য: যুদ্ধবিগ্রহের সময়েও কি তামাশা?

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এবং পুতিনের কথিত ‘জোরদার জবাবের’ অঙ্গীকারের মধ্যে এক কৌতুকপ্রদ বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একদিকে যখন ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক মেরুদণ্ডে আঘাত হানছে এবং দুই দেশের প্রতিনিধিরা তুরস্কের মতো নিরপেক্ষ ভূমিতে মাত্র এক ঘণ্টা ধরে শান্তি আলোচনা চালিয়ে মৃতদেহ বিনিময়ের মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তখন বিশ্বনেতারা ফোন কলে যুদ্ধের ‘ভবিষ্যৎ প্রতিক্রিয়া’ নিয়ে ‘ভালো কথোপকথন’ সারছেন। এটি কি যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরার জন্য নতুন ধরনের ‘ব্ল্যাক কমেডি’, নাকি আন্তর্জাতিক কূটনীতি সত্যিই এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্ভবত, আধুনিক যুদ্ধ শুধু সামরিক শক্তির পরীক্ষা নয়, বরং বাগাড়ম্বর এবং কথার মারপ্যাঁচের এক নতুন প্রদর্শনী!

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর