ব্যুরো নিউজ ২৭ মে : ক্রিকেট বিশ্বের মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী অর্পিতা গঙ্গোপাধ্যায় অল্পের জন্য ইতিহাসের পাতায় “সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া” পর্যটকদের তালিকায় নাম লেখাতে পারলেন না। পুরীর সমুদ্র সৈকতে ওয়াটার স্পোর্টসের নামে এক প্রকার ‘হিট অ্যান্ড রান’ কান্ড ঘটিয়েছে একটি স্পিডবোট। ঢেউয়ের তালে তালে সেই স্পিডবোট যখন জলের গভীরে ডুব দিচ্ছিল, ঠিক তখনই দেবদূতের বেশে লাইফগার্ডরা তাঁদের উদ্ধার করে। তবে, ঘটনার পর বৌদির অভিযোগ, এই দুর্ঘটনা নাকি “টাকার লোভের” করুণ পরিণতি।
যখন নৌকাটি নিজেই জলক্রীড়ায় মেতে উঠল
স্নেহাশীষ এবং অর্পিতা অন্যান্য পর্যটকদের সাথে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছিলেন, এমন সময় তাঁদের স্পিডবোটটি অপ্রত্যাশিতভাবে নিজেই জলক্রীড়ায় অংশ নিয়ে উল্টে যায়। অর্পিতা গঙ্গোপাধ্যায় হাসিমুখেই অভিযোগ করেন, “নৌকাটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ১০ জন, কিন্তু সম্ভবত দ্রুত কোটিপতি হওয়ার লোভে তারা মাত্র তিন-চারজনকে নিয়ে সাগরে ডুব দিয়েছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, এটি নাকি দিনের শেষ বোট ছিল এবং অপারেটররা তাঁদের উদ্বেগকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছিল।
অর্পিতার ট্রমা: “লাইফগার্ড না থাকলে আমাদের সলিল সমাধি হত!”
অর্পিতা গঙ্গোপাধ্যায় এখনও ঘটনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। তিনি জানান, সমুদ্রের ভেতরে ঢোকার সাথে সাথেই বিশাল ঢেউ তাদের সাধের স্পিডবোটে আঘাত হানে। “যদি লাইফগার্ডরা না আসত, তাহলে আমরা কি আর বেঁচে থাকতাম!” এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করে তিনি যেন লাইফগার্ডদেরকেই এক প্রকার ডেথ-বন্ড থেকে বাঁচিয়ে দিলেন। তিনি যুক্তি দেন, নৌকায় আরও বেশি লোক থাকলে হয়তো সেটা ওজনদার হয়ে ডুবে যেত না। তাই লাইফগার্ডদের তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কারণ তারা সঠিক সময়ে এসে যাত্রীদের ‘নিখোঁজ’ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।
অঘটনের মুহূর্ত ও ‘অপ্রশিক্ষিত’ অপারেটরদের কেরামতি
রবিবার সন্ধ্যায় লাইটহাউস এলাকার কাছে হোটেল সোনার বাংলার সামনে সমুদ্র সৈকতের কাছে এই ‘জল-মগ্ন’ ঘটনাটি ঘটে। কর্মকর্তারা বলছেন, স্পিডবোটটি গভীর জলে যেতেই ডুব দেয়, আর তাতে থাকা পর্যটকরা কিছুক্ষণের জন্য জলের নিচে ‘স্থিরচিত্র’ হয়ে যান। কারোরই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়নি শুনে মনে হচ্ছে, সমুদ্রের জল ছাড়া আর কোনো চোট তাঁদের লাগেনি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, স্পিডবোটটি নাকি এক বেসরকারি অ্যাডভেঞ্চার কোম্পানির ‘অপ্রশিক্ষিত’ বা ‘অনভিজ্ঞ’ কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। এমন অভিজ্ঞতাহীন কর্মীদের হাতে প্রাণ হাতে করে সমুদ্রে নামা যে অ্যাডভেঞ্চার, তা বলাই বাহুল্য!
পর্যটকদের অভিযোগ: “আসল ডুবুরি তো চালক নিজেই!”
জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুরীর সোনার বাংলা হোটেলের কাছে ঘটনাটি ঘটে, যখন নৌকাটি জোয়ারের কবলে পড়ে এবং উল্টে যায়। পর্যটকদের অভিযোগ, নৌকা চালকের ‘অবহেলার’ কারণেই এই দুর্ঘটনা। জেলা প্রশাসনকে স্পিডবোট পরিচালনা করার জন্য দায়ি কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা। তবে, এ যাত্রায় যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা-বৌদি অল্পের জন্য ‘জলমগ্ন’ হতে পারলেন না, সেটাই তো বড় খবর!