ব্যুরো নিউজ ২৩ মে : ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স (GRSE)-কে দেওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি অত্যাধুনিক ‘ওশান-গোয়িং টাগ’ বা বিশেষ ধরনের জাহাজ নির্মাণের প্রায় ২১ মিলিয়ন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা) অর্ডার বাতিল করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই বাতিল হওয়া অর্ডারটি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দেওয়া হয়েছিল।


অর্ডারের নেপথ্যে যা ছিল

জানা গেছে, শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার কয়েক সপ্তাহ আগেই এই অর্ডারটি দেওয়া হয়েছিল। বিবিস বাংলা-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সকে দৈর্ঘ্যে ৬১ মিটার এবং প্রস্থে ১৫.৮ মিটার আকৃতির একটি ‘ওশান-গোয়িং টাগ’ নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়েছিল, যার গভীরতা প্রায় ৭ মিটার হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কাঠামো শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যেই এই জাহাজটি নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী, জাহাজটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩ নটিক্যাল মাইল গতিবেগে যেতে পারবে বলে উল্লেখ ছিল। ২০২৪ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ডিফেন্স পারচেজ এবং গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স সংস্থার মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ঠিক এক মাস আগে শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসেছিলেন এবং তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন। সেই সময়েই দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

‘অপারেশন সিঁদুর’ এর সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে থাকছেন না ইউসুফ পাঠান, তৃণমূল সাংসদের সিদ্ধান্ত


দ্রুত ডেলিভারির শর্ত, তারপরই বাতিল

চুক্তি অনুযায়ী, জাহাজটি তৈরি করে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ডেলিভারি দেওয়ার শর্ত ছিল। ফলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এটি বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার এক বছর ঘোরার আগেই এই অর্ডার বাতিল করে দেওয়া হলো।


‘ওশান-গোয়িং টাগ’ কী?

‘ওশান-গোয়িং টাগ’ হলো অত্যন্ত শক্তিশালী ক্ষমতাসম্পন্ন এক বিশেষ ধরনের জাহাজ, যা মাঝসমুদ্র বা উন্মুক্ত সাগরে বিপন্ন জাহাজকে টেনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পারে। এই ধরনের জাহাজকে ‘টাগবোট’ও বলা হয়। এর বিশেষত্ব হলো, জাহাজটি নিজের চেয়ে বড় আকারের জাহাজকে সামনে বা পিছনে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। বিশ্বের সব বড় বন্দর ও হারবারে টাগবোট একটি অপরিহার্য অংশ; বড় জাহাজের ডকিং ও বার্থিং-এর সময় এই ধরনের ছোট ও শক্তিশালী জাহাজের প্রয়োজন পড়ে।

কলকাতায় তিরঙ্গা যাত্রা ,বিএসএফ জওয়ান মুক্তি, ভুয়ো খবর দমন, সন্ত্রাসবাদ নিপাতন : মোদীর নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত দাবি শুভেন্দু অধিকারীর


সম্পর্কের অবনতিই কি কারণ?

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নেওয়া বহু সিদ্ধান্ত আগেও রদ করেছে। মনে করা হচ্ছে, বর্তমানে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণেই গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের এই অর্ডার বাতিল করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ কেন এই জাহাজ তৈরির অর্ডার বাতিল করেছে, সে বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল বার্তা এখনও মেলেনি।

এক শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। যদিও তার ধারাগুলি কখনওই প্রকাশ করা হয়নি বা পাবলিক ডোমেইনে নেই। তবে চুক্তিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের আশ্বাস অবশ্যই আছে। আমার ধারণা গার্ডেনরিচকে ওই প্রতিরক্ষা জাহাজ বানানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল এই চুক্তির অধীনেই।”

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর