ব্যুরো নিউজ ১৬ই মে : ‘অপারেশন সিঁদুর ‘-এর জন্য বিমান বাহিনিকে প্রশংসা করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং শুক্রবার বলেন, যে আইএমএফ ( আন্তরজাতিক আর্থিক তহবিল ) পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন করছে, তাদের পাকিস্তানকে সাহায্য পুনর্বিবেচনা করা উচিত। মন্ত্রী উল্লেখ করেন যে ‘অপারেশন সিঁদুর ‘ এখনও শেষ হয়নি। “যা ঘটেছে তা কেবল একটি ট্রেলার ছিল। সঠিক সময় এলে, আমরা বিশ্বকে পুরো ছবি দেখাব।”
গুজরাটের ভুজ এয়ারবেসে সাহসী ভারতীয় বৈমানিকদের উদ্দেশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে প্রাপ্ত তহবিলের একটি বড় অংশ তাদের দেশে সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোতে ব্যয় করবে, ভারত চায় আইএমএফ পাকিস্তানের অর্থায়ন নিয়ে পুনর্বিবেচনা করুক।”
গত সপ্তাহে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেইলআউট অনুমোদন করেছে – এই পদক্ষেপটি ভারতের তীব্র অপছন্দ সৃষ্টি করেছে। ভারতের প্রতিবাদ সত্ত্বেও, আইএমএফ বোর্ড ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদন করেছে, এই যুক্তিতে যে ইসলামাবাদ দৃঢ় কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রদর্শন করেছে যার ফলে পাকিস্তানে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত রয়েছে।
শ্রী রাজনাথ সিং স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা পাকিস্তানকে নজরদারিতে রেখেছি। যদি তাদের আচরণের উন্নতি হয়, তবে ঠিক আছে, অন্যথায়, তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে…”
সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না এটা ভুল হবে যদি আমি বলি যে লোকেরা প্রাতঃরাশ করতে যতটা সময় নেয়, আপনারা সেই সময়টি শত্রুদের মোকাবিলা করতে ব্যবহার করেছেন। আপনারা শত্রুদের ভূমিতে গিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছেন। এর প্রতিধ্বনি কেবল ভারতের সীমান্তে সীমাবদ্ধ থাকেনি; সারা বিশ্ব তা শুনেছে। সেই প্রতিধ্বনি কেবল ক্ষেপণাস্ত্রের ছিল না, বরং আপনাদের বীরত্ব এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের সাহসেরও ছিল।”
ভারতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মোস পাকিস্তানকে রাতের আঁধারে দিনের আলো দেখিয়েছে। ভারতীয়রা পাক ক্ষেপণাস্ত্র দেখে পালাচ্ছে না বরং ভিডিও করছে, তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “এমনকি পাকিস্তানও ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তি স্বীকার করেছে। আমাদের দেশে একটি পুরনো প্রবাদ আছে, ‘দিনে তারা দেখা’। ভারতে তৈরি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানকে ‘রাতের অন্ধকারে দিনের আলো’ দেখিয়েছে…”
তিনি বলেন, “ভুজ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ের সাক্ষী ছিল, এবং আজ আবারও এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ের সাক্ষী… এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি গর্বিত।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “অপারেশন সিন্দুরে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কেবল শত্রুদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেনি, বরং তাদের নির্মূল করতেও সফল হয়েছে।”
“অপারেশন সিন্দুরের সময় আপনারা যা করেছেন তা ভারতে বা বিদেশে থাকা সকল ভারতীয়কে গর্বিত করেছে। পাকিস্তান-পালিত সন্ত্রাসবাদকে গুঁড়িয়ে দিতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর মাত্র ২৩ মিনিট লেগেছিল।”
শ্রী সিং ভুজ এয়ার ফোর্স স্টেশনে এয়ার ওয়ারিয়র্সদের সাথে মতবিনিময় করেন। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংও তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।
এর একদিন আগে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের বাদামী বাগ ক্যান্টনমেন্টে তার সফর শেষ করেন, যেখানে তিনি ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন।
“গতকালই আমি শ্রীনগরে আমাদের সাহসী সেনা কর্মীদের সাথে দেখা করেছি। আজ, আমি এখানে বিমান যোদ্ধাদের সাথে দেখা করছি। গতকাল, আমি উত্তরাঞ্চলে আমাদের জওয়ানদের সাথে দেখা করেছি, এবং আজ আমি দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বিমান যোদ্ধা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে দেখা করতে এসেছি। উভয় ফ্রন্টে উচ্চ মনোবল ও উদ্যম দেখে আমি উৎসাহিত বোধ করছি। আমি নিশ্চিত যে আপনারা ভারতের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখবেন।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভুজ-এর স্মৃতিবন ভূমিকম্প স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘরও পরিদর্শন করবেন, যা ২০০১ সালের ২৬ জানুয়ারী এই অঞ্চলে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারানো মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
