বর্তমান বিশ্ব রাজনিতির পরিস্থতিতে, এক কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে, ইজমাইট্রিপ (EaseMyTrip), কক্স অ্যান্ড কিংস (Cox & Kings) এবং ইক্সিগো (ixigo)-সহ শীর্ষস্থানীয় ভ্রমণ সংস্থাগুলি তুরস্ক ও আজারবাইজানের সমস্ত ট্রাভেল প্যাকেজ, ফ্লাইট এবং হোটেল বুকিং স্থগিত করেছে, ভারতের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে — বিশেষ করে পাহেলগাম হামলার পর।
এই সিদ্ধান্ত আসে সেই ঘটনার পরপরই, যেখানে ভারত সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। এবং জবাবে তুরস্ক ও আজারবাইজান প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পক্ষে কূটনৈতিক সমর্থন জানিয়েছে।
সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শত্রুতার নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ার পর, ভারতের বিদেশগামী পর্যটন খাতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশে তুরস্কের প্রতি চাহিদায় তীব্র পতন দেখা যাচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের প্রেক্ষিতে তুরস্ক পাকিস্তানের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানানোয়, ভারতীয় পর্যটক ও ভ্রমণ সংস্থাগুলি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে, যার ফলে ব্যাপকভাবে বুকিং বাতিল ও নতুন বুকিং স্থগিত হয়ে গেছে।
অনলাইন ট্রাভেল বুকিং প্ল্যাটফর্ম ইক্সিগোর (ixigo) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অলোক বাজপেয়ী ১০ মে শনিবার এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ এক পোস্টে ঘোষণা করেন যে, চলমান ভারত-পাকিস্তান সংকটের প্রেক্ষিতে সংস্থা তুরস্ক, চীন ও আজারবাইজানে সমস্ত হোটেল ও ফ্লাইট বুকিং স্থগিত করছে।
তিনি লেখেন:
“এবার যথেষ্ট হয়েছে! রক্ত আর বুকিং একসাথে বইতে পারে না। আমরা তুরস্ক, চীন ও আজারবাইজানের জন্য সমস্ত ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং ইক্সিগো-তে স্থগিত করছি।”
এক্স-এ আরেকটি পোস্টে ইক্সিগো জানায়:
“আমাদের দেশের প্রতি সংহতি জানিয়ে, ইক্সিগো তুরস্ক, আজারবাইজান এবং চীনের জন্য ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং স্থগিত করছে। কারণ ভারত নিয়ে আমাদের মনে কোনো দ্বিধা নেই। জয় হিন্দ।”
একটি ট্রাভেল এজেন্টদের B2B মার্কেটপ্লেস অনুযায়ী, তুরস্কে ভ্রমণের আগ্রহে “প্রায় ৮০ শতাংশ বুকিং বাতিল বা স্থগিত হয়েছে” — এটি একটি বড়সড় পতন।
কক্স অ্যান্ড কিংস এবং ট্র্যাভোমিন্টের মতো আরও অনেক অনলাইন ট্রাভেল বুকিং সংস্থাও তুরস্ক ও আজারবাইজানের জন্য সমস্ত ট্রাভেল প্যাকেজ বিক্রি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে, এই দেশগুলিকে বয়কটের পদক্ষেপ হিসেবে।
এই পদক্ষেপগুলি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন তুরস্ক ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’–এর সমালোচনা করে বলেছে, এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে “সম্পূর্ণ যুদ্ধের” ঝুঁকি বাড়ায়। তুরস্কের পাশাপাশি আজারবাইজানও এই বিমান হামলার নিন্দা করেছে।
এই উত্তেজনা শুরু হয় গত মাসে কাশ্মীরের বাইসারান উপত্যকায় এক প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার পর, যেখানে ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের মৃত্যু ঘটে। এর জবাবে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। এর পরবর্তী সামরিক পাল্টা প্রতিক্রিয়া পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে তুরস্ক পাকিস্তানের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দেয়, যা ভারতীয় ট্র্যাভেল ইন্ডাস্ট্রি ও বিদেশগামী পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
গত সপ্তাহে ভারত ও পাকিস্তান উভয়পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।