ব্যুরো নিউজ,২১ এপ্রিলঃ লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে এবং দলের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ প্রশমনে কৌশল বদলেছে বিজেপি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সাংগঠনিক বৈষম্য দূর করে পুরনো ও নতুন নেতাকর্মীদের মধ্যে সমতা আনার পথে হাঁটছে দল। অভিমানী কর্মীদের ফের সক্রিয় করতে এবার মণ্ডল ও জেলা কমিটিতে বিদায়ী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
পুরনোদের উপেক্ষা নয়, সম্মান দিয়েই নতুনদের সঙ্গে মিলিয়ে কমিটি গঠন
দলের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল, একবার নেতৃত্ব বদল হলেই পুরনো মুখদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এতে অভিজ্ঞ ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা সংগঠন থেকে দূরে সরে যান। এই সমস্যার সমাধানে এবার কঠোর নির্দেশনা দিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। রাজ্য বিজেপির সঙ্গে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন কমিটিগুলিতে অন্তত ৫০ শতাংশ সদস্যকে আগের কমিটি থেকেই রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি কমিটিতে অন্তত দু’জন নারী সদস্য রাখাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩৯টির সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও জেলাভিত্তিক বা মণ্ডল স্তরের নতুন কমিটি এখনও গঠন হয়নি। বনসল জানিয়ে দিয়েছেন, এই কমিটি গঠনে পুরনোদের সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে ‘নতুন মুখে’ ভরসা করা চলবে না। কারণ, ভোট পরিচালনায় অভিজ্ঞতার দরকার হয়। বুথ ম্যানেজমেন্ট, স্লিপ বিতরণ, প্রচার, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ—এসব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ পুরনো নেতাকর্মীদের গুরুত্ব অনেক বেশি।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমরা আগেও ভারসাম্য রক্ষা করে কমিটি গড়ার চেষ্টা করেছি। এখন সেটা নীতিগতভাবে বাধ্যতামূলক হওয়ায় ভালোই হয়েছে।’’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ দলের ভেতরের ক্ষোভ প্রশমনে সাহায্য করবে। অনেক পুরনো নেতাই অভিমানে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বা দল ছেড়েছেন। এদের অনেকে আবার ব্যবসা, সংসার কিংবা ব্যক্তিগত ক্ষতির আশঙ্কায় দলীয় কাজ থেকে পিছিয়ে এসেছেন। এমনই এক বীরভূমের প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘ভোটে হারলে দোকান ভেঙে দেবে তৃণমূল, তাই আর আগের মতো ঝাঁপাতে পারি না।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এই ‘অভিমানী’ কর্মীদের মন জয় করে ফের সংগঠনের কাজে লাগাতে চায়। এই উদ্যোগে আরএসএস-ও মাঠে নেমেছে। আশা করা হচ্ছে, অনেকেই আবার সক্রিয় হবেন। নতুন কমিটিতে পুরনোদের অন্তর্ভুক্তির এই নির্দেশ দলীয় সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং নির্বাচনী কাজে অভিজ্ঞতার ঘাটতি দূর করবে। এতে দলও মজবুত হবে এবং মাঠ পর্যায়ে সমন্বয়ও বজায় থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।