আফগানিস্তানের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের হারের ইতিহাস

ব্যুরো নিউজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি:২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ইংল্যান্ডের বিদায় নেওয়ার পর এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার লাহোরে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৮ রানে হারিয়ে আফগানিস্তান নিশ্চিত করেছে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযান। যদিও আফগানদের এই জয় অনেকেই ‘ফ্লুক’ বা অবাক করা কিছু মনে করলেও, তাদের অতীত পারফরম্যান্স সেই ধারনা মিথ্যে প্রমাণ করেছে। গত বছরের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকেই হারিয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান, আর সেই স্মৃতি এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে রয়ে গেছে।

আইপিএলে কবে শেষ হবে মহেন্দ্র সিং ধোনির অভিযান? উত্তর নিজেই দিলেন তিনি অদ্ভুত কায়দায়

আফগানিস্তানকে বয়কটের দাবি উঠেছিল কেন?

গত জানুয়ারিতে, ইংল্যান্ডের এক দল রাজনৈতিক নেতা এবং সাংসদ আফগানিস্তানের তালিবান শাসনের অধীনে মহিলাদের অধিকার লঙ্ঘন হওয়ার কারণে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের কাছে আফগানদের বিরুদ্ধে খেলার বিরুদ্ধে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন। প্রায় ২০০ জন সাংসদ একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কাছে দাবি করেছিলেন, এই পরিস্থিতির কারণে ইংল্যান্ড দল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে না যায়। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন লেবার পার্টির তনিয়া অ্যান্তোনিয়াজি, যিনি বলেছিলেন, ‘পরিবর্তন আনার জন্য ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের ক্ষমতা ব্যবহার করা উচিত।’

তবে ইংল্যান্ড বোর্ড এই দাবি খারিজ করে দেয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসিবি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিল এবং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে তারা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক জোস বাটলারও বলেছিলেন, “আমার মনে হয় না যে বয়কটের পথে হাঁটা উচিত।” এইভাবেই রাজনীতির চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট মাঠে নিজেদের খেলতে নামেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। কিন্তু শেষপর্যন্ত মাঠে তারা হেরে যায়, এবং আফগানিস্তান তাদের ৮ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে যায়।

ডব্লিউপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ানসের জয়ঃ ব্রান্টের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ইউপি ওয়ারিয়র্সকে হারিয়ে শীর্ষে মুম্বই

এই জয়টি শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল না। আফগানিস্তান গত কয়েক বছরে একাধিক আইসিসি টুর্নামেন্টে বড় দলকে হারানোর কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের পর তারা পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়াকেও হারায়। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকেও পরাজিত করে। এসব অর্জন আফগানিস্তানের ক্রিকেটের উন্নতির প্রমাণ।২০২৩ সালের বিশ্বকাপে আফগানিস্তান অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় জয়ী হয়ে উঠেছিল, কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অসাধারণ ইনিংসে তাদের জয় চলে যায়।তবে এরপর থেকে আফগান ক্রিকেট দলের উন্নতি অব্যাহত রয়েছে এবং তারা প্রতিটি টুর্নামেন্টে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় সেই শক্তির প্রতিফলন এবং আফগানিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।এখন আফগানিস্তান ক্রিকেট বিশ্বে একটি শক্তিশালী নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। তাদের খেলা শুধু প্রতিপক্ষের জন্য নয়, বরং সারা পৃথিবীর ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। একের পর এক সাফল্য তাদের আত্মবিশ্বাস এবং ভবিষ্যতের জন্য আশার আলোকস্ফূর্তির সৃষ্টি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর