ব্যুরো নিউজ, ১৯ ফেব্রুয়ারি:উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বারাণসীতে কাশী তামিল সঙ্গমের তৃতীয় সংস্করণের উদ্বোধন করেন। এই অনন্য অনুষ্ঠানটি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে এবং কাশী ও তামিলনাড়ুর মধ্যে গাঁথা ঐতিহাসিক, আধ্যাত্মিক এবং সৃজনশীল সম্পর্কের ওপর জোর দেয়।
ফের কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইনে চারদিনের ট্রাফিক ব্লক, জানুন বিস্তারিত
অনুপ্রেরণা এবং দৃষ্টিভঙ্গি:
কাশী তামিল সঙ্গম ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ এই দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ হিসেবে পালন করা হয়। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে এই অনুষ্ঠানটি ২০২৫ সালের মহাকুম্ভ উৎসবের সাথে একীভূত হয়ে ভারতের ঐতিহ্যকে উৎসাহিত করছে এবং স্বরাজের মূল দৃষ্টিভঙ্গিকে শক্তিশালী করছে।
কাশী, কুম্ভ এবং অযোধ্যার তাৎপর্য:
এই সংস্করণটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে কারণ এটি অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের পর প্রথমবার উদযাপিত হচ্ছে। এসময়, অংশগ্রহণকারীরা কাশী, কুম্ভ এবং অযোধ্যার ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী কাশীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং তামিল সাহিত্যের উত্তরাধিকারের প্রশংসা করেন, যা এই অনুষ্ঠানকে ভারতের ঐতিহ্যের প্রতি পুনঃসংযোগ ঘটায়।
‘4S’ থিম:
২০২৫ সালের কাশী তামিল সঙ্গমের থিম ‘4S’—সন্ত, বিজ্ঞানী, সমাজ সংস্কারক এবং ছাত্রদের নিয়ে গঠিত। এই থিমটি মহর্ষি অগস্ত্যর জীবন ও কর্মের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যিনি উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যে সেতুবন্ধনকারী ঋষি হিসেবে খ্যাত। এই সঙ্গম, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণের মানুষের মধ্যে সংলাপ এবং মেলবন্ধন প্রতিষ্ঠা করেছে।
সঙ্গীত, ঐতিহ্য এবং ভক্তি:
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গঙ্গার তীরে এই উদযাপন সঙ্গীত, ঐতিহ্য এবং ভক্তির এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটাচ্ছে। তিনি জানান, উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য একত্রে এগিয়ে চলা প্রয়োজন, যা এই অনুষ্ঠানটি শক্তিশালীভাবে প্রদর্শন করছে।
মহাকুম্ভের মোনালিসা মালা বিক্রেতা থেকে আজ বলিউডের নায়িকা!
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ:
ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থার জাতীয় ডিজিটাল সংগ্রহস্থল প্রতিষ্ঠা এবং প্রাচীন গ্রন্থগুলির ডিজিটালাইজেশনসহ, কেন্দ্রীয় সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগগুলির মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ভাষা বই যোজনা, যা ২২টি ভারতীয় ভাষায় পাঠ্যপুস্তক অনুবাদ করবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল মহাকুম্ভ তৈরি করবে।
কাশী তামিল সঙ্গমের ঐতিহাসিক সংযোগ:
কাশী (উত্তরপ্রদেশ) এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে প্রাচীন সংযোগ ১৫ শতকে শুরু হয়, যখন মাদুরাই অঞ্চলের শাসক রাজা পরক্রম পাণ্ড্য কাশী ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসেন। কাশী থেকে ফিরতি পথে, তিনি একটি গাছের নীচে বিশ্রাম নেন এবং সেখানেই তার গরু লিঙ্গ বহন করতে অস্বীকার করে। পরক্রম পাণ্ড্য এটিকে ভগবানের ইচ্ছা মনে করেন এবং সেই স্থানটি আজ তামিলনাড়ুর শিবকাশী হিসেবে পরিচিত।কাশী তামিল সঙ্গম শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান নয়, এটি ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ সেতু। এই অনুষ্ঠানটি দেশের দুই প্রান্তের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি ভারতের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গৌরবকে তুলে ধরে।