সামু দাস, আলিপুরদুয়ার, ইভিএম নিউজঃ  জঙ্গল রক্ষার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। রোজকার মতই রবিবার সন্ধ্যায় বনদফতরের নিজস্ব কুনকি হাতি পৃথ্বীরাজের পিঠে চড়ে জঙ্গল পর্যবেক্ষণে বেড়িয়েছিলেন, দফতরের মাহুত রাজীব ওঁরাও ওরফে জীবন। রুটিনমাফিক আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়ার দক্ষিণ মেদাবাড়ি এলাকায় লাকড়া রোডের ধারে গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিলেন রাজীব ওঁরাও। সেইসসময় হঠাৎই পৃথ্বীরাজকে ঘিরে ধরে একদল বুনো হাতি। কুনকি হাতিটির পায়ে বেড়ি পরানো ছিল। তাই সে পালাতে বা পাল্টা লড়াই করতে পারছিল না। ফলে অসহায়ের মতো বুনোহাতির দলের আক্রমণে দেহের ভারসাম্য হারিয়ে, একসময় মাটিতে পড়ে যায় পৃথ্বীরাজ। তার পিঠ থেকে মাটিতে ছিটকে পরে মাহুত রাজীবও। মুহূর্তে বুনো হাতির দল পিষে দেয় বছরতিরিশের ওই মাহুতকে।
অবশ্য বাধ্য সঙ্গীর মতোই তাঁর মাহুতকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল পৃথ্বীরাজ। কিন্তু পারেনি। এরপর বুনোহাতির দল এলাকা ছেড়ে গভীর জঙ্গলে ঢুকে যায়।
নিরুপায় হয়ে কাতর স্বরে কাঁদতে কাঁদতে, এরপর ব্যাঙডাকির হস্তিশালায় ফিরে যায় পৃথ্বীরাজ। একা ফিরে আসা পৃথ্বীরাজের কান্না দেখে সন্দেহ হয়, কর্তব্যরত বনকর্মীদের। তৎক্ষণাৎ তাঁরা আরও তিনটি কুনকি হাতি নিয়ে মাহুত রাজীবকে খুঁজতে বেড়িয়ে পড়েন। অবশেষে দক্ষিণ মেদাবাড়ির লাকড়া রোডের ধারের জঙ্গলে উদ্ধার হয় রাজিবের ক্ষতবিক্ষত দেহ।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার পর মাহুত ও বনকর্মীদের সুরুক্ষা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে, বনকর্মীদের মহলে।
বনবিভাগের জলদাপাড়ার ডেপুটি ফরেস্ট অফিসার দীপক এম বলেছেন, এটা খুবই মর্মান্তিক এবং ব্যাতিক্রমী ঘটনা। সরকারি নিয়মানুযায়ী মৃত মাহুতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে। কীভাবে কর্তব্যরত বনকর্মী এবং মাহুতদের নিরাপত্তা দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই বনাধিকারিক।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর