ব্যুরো নিউজ, ২৭ জানুয়ারি:আপনার খাবার সরাসরি আপনার চুলের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। চুল পড়া, টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া, এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের ধরন—সবই পুষ্টির অভাবের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যা আপনি খান তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পুষ্টি না পাওয়া গেলে চুল দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে পড়তে পারে, যার ফলে তার স্বাভাবিক গুণাগুণ কমে যায়।চুলের কাঠামোগত ম্যাট্রিক্স প্রধানত কেরাটিন দ্বারা গঠিত, যা আপনার খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিনের গুরুত্বকে তুলে ধরে। এছাড়া, মেটাবোলিক্যালি সক্রিয় চুলের ফলিকলগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে নিয়মিত ভিটামিন ও মিনারেলের সরবরাহের প্রয়োজন। পুষ্টির অভাবে চুল পাতলা হওয়া, অতিরিক্ত পড়ে যাওয়া এবং ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া সহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
মাত্র ৫ টাকায় বাড়ান চুলের ঘনত্ব আর তার সাথে পান উজ্জ্বল ও স্বাস্থকর চুল, কিভাবে? পড়ুন
কি কি কারণ?
- প্রোটিনের অভাব
প্রোটিনের অভাবে চুল দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়, কারণ চুলের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের অভাবে কেরাটিন উৎপাদন হতে পারে না। এজন্য চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে মাংস, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, ডাল, বাদাম ইত্যাদি খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। - আয়রনের অভাব
আয়রনের অভাব চুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চুলের ফলিকলে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। আয়রনের অভাবে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম নামে একটি সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেখানে চুল অতিরিক্ত পড়ে। সুতরাং, সবুজ পাতা জাতীয় শাকসবজি, লাল মাংস, আয়রন সমৃদ্ধ সিরিয়াল ইত্যাদি খাবার খান এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে তা গ্রহণ করুন।
গাজরের রস চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সত্যিই সহায়ক নাকি শুধুই মিথ? জানুন
- জিঙ্কের অভাব
জিঙ্ক চুলের ফলিকলগুলির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং স্ক্যাল্পে সিবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই, জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন কুমড়োর বিচি, বাদাম ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। - বায়োটিনের অভাব
বায়োটিন (ভিটামিন B7) কেরাটিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও বায়োটিনের অভাব খুব বিরল, তবে এটি চুল পাতলা হওয়ার কারণ হতে পারে। তাই, ডিম, বাদাম, মিষ্টি আলু এবং কলা সহ বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। - ভিটামিন D এর অভাব
ভিটামিন D চুলের ফলিকলের বৃদ্ধি উদ্দীপিত করে, তাই এটি চুল পড়া এবং অ্যালোপেসিয়া প্রতিরোধে সহায়ক। সূর্যের আলোতে সময় কাটান এবং ভিটামিন D সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করুন। এছাড়াও, চর্বিযুক্ত মাছ ও ডিমের কুসুমে ভিটামিন D থাকে।
- ভিটামিন C এর অভাব
ভিটামিন C কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এর অভাব চুলের কাঠামো দুর্বল করতে পারে। ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে সাইট্রাস ফল, স্ট্রবেরি, বেল পেপার এবং আমলকি।
আপনার খাবারই আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য নির্ধারক। পুষ্টির অভাব চিহ্নিত করার জন্য আপনার চুলের পাতলা হওয়া, ভঙ্গুর হওয়া বা শুষ্কতা লক্ষ্য করুন এবং সময়মতো পদক্ষেপ নিন। সুষম খাদ্য গ্রহণ করে আপনি স্বাস্থ্যকর ও ঘন চুল এবং সুস্থ স্ক্যাল্প পেতে পারেন।