ব্যুরো নিউজ,১৯ নভেম্বর:পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচিত হতে শুরু করেছে। দীর্ঘ এক দশক পর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি ছাত্রদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিয়েছে। ২০১৫ সালে এক জরুরী সিন্ডিকেট সভায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকায় প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে এবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পাকিস্তানের ছাত্রদের জন্য আবারও সুযোগ দেওয়া হল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা শেষে ১৩ নভেম্বর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এবার থেকে পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসতে পারবেন।
বেলডাঙায় হিংসাঃ মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে পদক্ষেপের নির্দেশ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের
নতুন অধ্যায়ের সূচনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশা জানিয়েছেন, একসময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছিল, কিন্তু এখন যেহেতু এটি একটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অনেকেই স্কলারশিপ বা কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার জন্য যেতে চায়। তাই আমরা সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি ছাত্রদের প্রবেশাধিকার মেলার পাশাপাশি ঢাকা থেকেও পাকিস্তানে পড়তে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে, একটি একাডেমিক বিনিময় প্রক্রিয়া শুরুর সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের ইঙ্গিত।এর আগে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসও উল্লেখ করেছিলেন, পাকিস্তানসহ বেশ কিছু প্রতিবেশী দেশকে নতুন বন্ধু হিসেবে নিতে বাংলাদেশের আগ্রহ রয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তান সহ অনেক প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমি সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলেছি। এছাড়া, ইউনুস এও বলেছেন যে, বাংলাদেশ অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার প্রশংসা হচ্ছে।
ইডির বড় অভিযানঃ সান্তিয়াগো মার্টিনের দুর্নীতিতে ১২.৪১ কোটি টাকা উদ্ধার
এমনকি ইউনুস তার ভাষণে বলেন, আমরা আসিয়ানের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছি, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং তুরস্ক আমাদের সহযোগিতা করছে। তিনি আরও জানান, দিল্লি থেকে ২০ জন রাষ্ট্রদূতসহ ২৭টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের আসন্ন সফরের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি। এইসব বিষয়গুলি প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ এখন একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরি করছে এবং পাকিস্তান তার নতুন বন্ধুদের মধ্যে একটি হয়ে উঠছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতও পরিবর্তিত হচ্ছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি ভুলে গিয়ে দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি, পাকিস্তানি ছাত্রদের ঢাকায় পড়াশোনা করতে আসা এবং ঢাকার ছাত্রদের পাকিস্তানে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।