ব্যুরো নিউজ,১৯ সেপ্টেম্বর:জম্মু-কাশ্মীরের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হলো ১০ বছর পর বিধানসভা নির্বাচনের মাধ্যমে। বুধবার অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে জম্মু ও কাশ্মীরের ভোটারদের মধ্যে অসাধারন সাড়া দেখা গেছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান।
গত ৩৫ বছরে স্থানীয় ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি
২০১৯ সালের অগস্টে মোদী সরকারের দ্বারা জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর এটাই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই নির্বাচনে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পান্ডুরাং কে পোল জানিয়েছেন, “আমরা এই প্রথম, প্রথম দফা ভোটে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। ২৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫৮.১৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।”২০১৪ সালের নির্বাচনে ৬৬ শতাংশ ভোটার ভোট প্রদান করেছিলেন, যা ২০০৮ সালে ছিল ৬১ শতাংশ এবং ২০০২ সালে ৪৪ শতাংশ। সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার আগে ১৯৮৭ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল ৭৫ শতাংশ। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনে জম্মু-কাশ্মীরের ৫৮ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন, যা গত ৩৫ বছরে স্থানীয় ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ চিত্র।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কিশতওয়ার জেলায় সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে, যা ৭৭.২৩ শতাংশ। অন্যদিকে, পুলওয়ামা জেলায় ভোটদানের হার ছিল মাত্র ৪৩.৮৭ শতাংশ। ডোডায় ৬৯.৩৩ শতাংশ, রামবাণে ৬৭.৭১ শতাংশ, কুলগাঁওয়ে ৫৯.৬২ শতাংশ এবং অনন্তনাগে ৫৪.১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।অনন্তনাগ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের খণ্ডপাহাড়ি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটদাতাদের উৎসাহ ছিল বিশেষভাবে নজরকাড়া। এখানে মোট ৬৭৮ জন ভোটার থাকলেও, প্রথম দুই ঘণ্টায় ১৩০ জন ভোট দিতে এসে উপস্থিত হন।এক কৃষক মেহরাজউদ্দিন ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে বলেন, “গত ১০ বছর ধরে আমাদের কোনও নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নেই। এই সময়কালে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গৃহকর্তা ছাড়া পরিবার বিধ্বস্ত হয়ে যায়।”প্রথম দফার এই নির্বাচনে ২৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ২১৯ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ২৩.২৭ লক্ষের কিছু বেশি ভোটার। এই নির্বাচন শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের মধ্যে নতুন আশা এবং সুযোগের প্রতীক।