লাবনী চৌধুরী, ৩১ মার্চ: ছোটবেলা থেকেই আড্ডা দিতে ভালবাসতেন সাহাবাবু। কিন্তু আড্ডা মেরে কি আর দিন চলে। তাই বাড়ির চাপ তো বটেই, সমাজের অন্যান্য মানুষেরাই বা কি বলবে? সাহা বাড়ির ছেলে কিছুই করে না। খায় দায় আর আড্ডা মেরে বেরায়! কিন্তু এই উত্তরে তো বাড়ির লোক সন্তুষ্ট নয়। তাই বড় হয়ে ‘আড্ডাবাজ’ হলে চলবে না, বরঞ্চ অন্য কিছু একটা হতে হবে এই ভাবনা নিয়ে ইলেক্ট্রিশিয়ান হলও বটে। কিন্তু মন পড়ে আছে তো সেই আড্ডায়।
মার্কেটে আসতে চলেছে ইয়েজদি রোডকিং! ভাইরাল হল ভিডিও!
তাই আড্ডাটাকেই করে তুললেন জীবনের পাথেও। আছে এক ঝাঁক বইয়ের সম্ভার সঙ্গে ‘মাশালাদার’ চা। চাইলেই সারা দিন আপনিও সেই আড্ডায় যোগ দিয়ে কাটাতে পারেন সময়। এমনকি চাইলে নিজের পছন্দ মত বই বেঁছে নিয়ে দিতেপারেন ভাবনার জগতে ডুব। তবে কোনও তাড়া নেই। যতক্ষণ ইচ্ছা থাকুননা আপনার ইউটোপিয়ায়।
তবে এসব শোনার পর অবশ্যই একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কোথায় সেই আড্ডার ঠেক?
তবে এই আড্ডার ঠিকানা পুরনো শহর কলকাতাতেই। উত্তর কলকাতার দুটি চায়ের দোকানকে ঘিরে বসেছে এই আড্ডার আসর। শ্যামবাজারের সুবীরের দোকান আর রতনের দোকানেই বসে ‘উত্তরের আড্ডা’। এই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নেওয়া উদ্যোগ ছিল ফানুশ উৎসব। ২ হাজার ফানুশ উড়িয়ে এই উৎসব করা হয়। এরপর ২০১৭ সালে সরস্বতী পুজোয় ১০ হাজার স্কোয়ার ফুট রাস্তা জুড়ে আলপনা ছিল এই অ্যাসোসিয়েশনের অভাবনীয় উদ্যোগ।
তবে এই সব কিছুর মূলে কিন্তু সেই ‘আড্ডাবাজ’ ছেলেটিই। তবে তিনি কোনও সেলেব নন, আমার আপনার মত খুবই সাধারণ এক জন মানুষ। নাম শম্ভু সাহা। তার এই সাধারণ হয়ে অসাধারন ভাবনাই মুগ্ধ করেছে সকলকে। তিনি সমাজের কাছে এক নতুন বার্তা দিয়েছেন। বর্তমান যুগে নানা গ্যাজেট ও অন্তরজালে জড়িয়ে পড়ছে এই প্রজন্ম। আর হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের পুরনো ঐতিহ্য। তাই পুরনো কলকাতার চায়ের আড্ডাকে আজ নতুন ভাবে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। সকাল বিকেল বহু মানুষ আসেন উত্তরের আড্ডায়। সময় কাটান নিজের মত করে। শুধু শ্যামবাজার নয়, আশেপাশের নানান জায়গা থেকে বহুমানুষের আনাগোনা এখানে। মানিকতলা থেকেও অনেকে আসেন এই বইয়ের সঙ্গে চায়ের আড্ডায় যোগ দিতে।