EVM NEWS EXCLUSIVE :   ইমরানের গ্রেফতারির পেছনে কে এই রহস্যময় নারী ?

সুকান্ত মিত্র-র রিপোর্টঃ ( Latest News)  ইমরান খান। রাজনীতিতে আসার আগে যিনি ক্রিকেট মাঠে  বহু বছর ধরে ছিলেন পাকিস্তানের আশা ভরসা। কে ইমরান? তিনি কেমব্রিজ ব্লু (Cambridge Blue)। পড়াশোনা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Cambridge University)। আদ্যন্ত পশ্চিমী শিক্ষায়, পশ্চিমী ভাবধারায় মানুষ। বিশ্বের প্রায় সব দেশের গোয়েন্দা সংস্থাই জানে যে ইমরান খান এর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ব্রিটেনের মদতে পুষ্ট। ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের এক্সটারনাল ইন্টেলিজেন্স উইং যা এমআই সিক্স (MI-6, External or Foreign Intelligence Wing of British Secret Service) নামে বিখ্যাত, ইমরানের উত্থানের পেছনে তাদের অবদান সবথেকে বেশি। এই এমআই সিক্সের দৌত্যের ফলেই পাক সেনা এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আই এস আই (ISI – Inter Services Intelligence) ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছিল।

কিন্তু গন্ডগোল বাধতে খুব বেশি দেরি হয়নি। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নীতি, বিদেশ নীতি সবকিছুতেই মাথা গলায় পাক সেনা এবং আইএসআই। ইমরান স্বাধীনচেতা। প্রতিমুহূর্তে সেনা এবং গোয়েন্দা বিভাগের মাথা গলানো তার পছন্দ হয়নি। প্রথমে ইমরান ভেবেছিলেন তার পশ্চিমী বন্ধুরা তার পক্ষে থাকবেন। কিন্তু সে গুড়ে বালি। কারণ পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী পদটা অনেকটা দাবার বোড়ের মতো। সেনা এবং আইএসআই পেছন থেকে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। এইখানেই বেঁধে গেল খটাখটি আর তার সুযোগ নিলেন শরীফ আর ভুট্টো-জারদারি পরিবার। সেনা এবং আইএসআইয়ের সঙ্গে চটপট হাত মিলিয়ে ফেললেন তারা। ব্রিটেনও বুঝলো ক্ষমতার চাবিকাঠি ইমরানের হাতে আর নেই। তাই ইমরানের প্রতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন সরিয়ে নিল তারা।
জনসমর্থন যদি ধরা হয়, তাহলে অবশ্যই ইমরানের কাছে শরিফ বা ভুট্টো- জারদারিরা বোল্ড হয়ে যাবেন। তাহলে কি এমন ঘটল যে ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হলো?
কারণ হলো:
১) পাক সেনা, আইএসআই, ভুট্টো-জারদারি পরিবারের হাত মেলানো
২) ইমরানের মত স্বাধীনচেতা লোকের উপর থেকে পশ্চিমী সমর্থন সরে যাওয়া
৩) এই অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য ইমরানের চীন ও রাশিয়ার দিকে, বিশেষ করে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়া।
আর এটাই শাপে বর হল ইমরান বিরোধীদের কাছে।

এই ভদ্রমহিলাকে বোধ করি কেউই চেনেন না। ইমরান খানের রাজ্যপাট খোয়ানোর অন্যতম কান্ডারী এই ভদ্রমহিলা। নাম বুশরা আমিওয়ালা। আমেরিকায় যে ক’জন পাক বংশোদ্ভুত রাজনীতিক রয়েছেন তাদের মধ্যে এক উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি ডেমোক্রেট (Democrat) দলের সদস্য, অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden) যে দলের, তিনিও সেই দলের। ২০২০ সালে এশিয়ান আমেরিকান কোয়ালিশন অফ শিকাগো (Asian American Coalition of Chicago) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা তাকে পুরস্কৃত করেছিল সামাজিক নানা কাজকর্মে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য।

২০২২ এর মার্চ মাসের গোড়ার দিকে আইএসআইয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আনজুম এর কোন বিশেষ প্রতিনিধি দেখা করেছিলেন বুশরার সঙ্গে। এই ভদ্র মহিলার সঙ্গে আইএসআইয়ের যোগাযোগ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সেই প্রতিনিধি বুশরাকে একটি বিশেষ অনুরোধ করেছিলেন। বুশরাকে বলা হয়েছিল ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকলে পাকিস্তান ক্রমশ চীনপন্থী হয়ে পড়বে এবং বাধা পেলে ইমরান দেশব্যাপী তার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করা প্রয়োজন। এরপর বুশরা দেখা করেছিলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের (Anthony Blinken)সঙ্গে।

কি কথা হয়েছিল তাদের মধ্যে জানা যায়নি। জানা সম্ভবও নয়। অর্থাৎ কথা যাই হয়ে থাকুক তার কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। তবে আগে পরে যা ঘটেছে তাকে অবশ্যই circumstantial evidence বলা যায়। কারণ এরপরই পাকিস্তানে অতিসক্রিয়  হয়ে ওঠে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। শরিফ পরিবার এবং ভুট্টো-জারদারি পরিবারের মধ্যে কিছু মতানৈক্য ছিল যা মেটানো সম্ভব হচ্ছিল না আইএসআইয়ের পক্ষেও। এবার সিআইএ মাঠে নেমে পরল দৌত্য করতে। সূত্রের খবর, মাত্র তিন দিনের মধ্যেই সামান্য যা মতপার্থক্য ছিল তা ভুলে গিয়ে হাত মিলিয়ে ফেলে দুটি পরিবার। আই এস আই যা কয়েক মাসের চেষ্টাতেও পারিনি।
এদিকে ইমরানের বড় ভুল ছিল চীনের সঙ্গে হাত মেলানো, চীনের ঋণ নেওয়া। কারণ চীনও এমন কিছু ধোয়া তুলসীপাতা দেশ নয়। তারা যে দেশকে ঋণ দেয় সে দেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে চায়। আর দ্বিতীয়ত, বর্তমান প্রেক্ষিতে আমেরিকার এক নম্বর শত্রু দেশ হচ্ছে চীন।
এবার ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ালো – একদিকে শরিফ ও ভুট্টো-জারদারি এই দুটি পরিবার, আইএসআই এবং পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তারা – যার পেছনে রয়েছে ব্রিটিশ ও মার্কিন দেশের প্রত্যক্ষ সমর্থন, আর অন্যদিকে ইমরান, তার দল, তার সমর্থক পাকিস্তানের বিরাটসংখ্যক মানুষ এবং চীনের সমর্থন। এই লড়াইয়ে হেরে গেলেন ইমরান। কারণ প্রশাসনিক সহযোগিতা তিনি পেলেন না। আসলে পাক প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট লোকজন। গদিচ্যুত হলেন ইমরান খান।
কিন্তু ওই যে, বিশাল জনসমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে। তাই পিছু হঠলেন না ইমরান। গদি হারালেও রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওই জনসমর্থনের জোরেই।
আর শেহবাজ শরীফ সরকারও বুঝতে পারছিল, ইমরানের গতি রোধ করতে না পারলে খুব শীঘ্রই গদি হারাতে হবে তাদের। গুলি করে হত্যার চেষ্টা সফল হলো না। কাজেই যেভাবেই হোক ইমরানকে গ্রেফতার করতেই হবে। দু’বার সে চেষ্টাও সফল হয়নি। তৃতীয়বার হয়েছে। আর ইমরানের হার মানে এক্ষেত্রে সেটা চীনেরও হার। তবে  বেশ কিছুটা স্বস্তি পেল ভারত, কারণ একেবারে ঘরের পাশের চিরশত্রু দেশে আরেক ভয়ংকর শত্রুর দাপাদাপি হলে তা ভারতের সার্বভৌমত্বের পক্ষে রীতিমতো বিপজ্জনক হতে পারত। (EVM News Exclusive)

বিকানির-গৌহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার আড়াই বছর পর চাকরি গেল স্টেশন মাস্টারের

অপরাধের দুনিয়ায় নাম কুড়োতেই কি আতিক এবং আশরাফ খুন?

 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর