ইভিএম নিউজ ব্যুরো, বীরভূমঃ গরু পাচারের তদন্ত আসলে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো। আদালতে শুনানিতে এমনটাই ব্যাখ্যা করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সিবিআই। আর তাঁদের সেই দাবি যেন প্রতিদিনই প্রমাণ হচ্ছে। গরুপাচার মামলা তদন্ত নেমে বীরভূমের বেতাজ বাদশা তথা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ইতিমধ্যেই সিবিআই এবং ইডি। পাশাপাশি পাচার কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনুব্রত কনিষ্ঠদের একাধিক অ্যাকাউন্টে তল্লাশি চালিয়ে, বিপুল বেআইনি টাকা লেনদেনের হদিস পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। পাশাপাশি তদন্তের সূত্রে বীরভূমের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে হানা দিয়ে, ৩৩০ টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছিলেন, ইডি-র তদন্তকারীরাও। সেই তালিকাতেই যোগ হল, আরও ১১৫টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। তবে তার চেয়েও চমকপ্রদ বিষয় হল, এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি তৈরি হয়েছিল, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া আধারকার্ড দিয়ে। আদালতে শুক্রবার এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দাখিল করে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, যাঁদের আধার কার্ড ব্যবহার করে এই ভুয়ো একাউন্টগুলি তৈরি করে গরু পাচারের বেআইনি টাকা লেনদেন করা হয়েছিল, তাঁরা নিতান্তই প্রান্তিক মানুষ। অ্যাকাউন্টের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না।আদালতে শুক্রবার দাখিল করা ওই রিপোর্টে সিবিআই এও জানিয়েছে, যে এই সব অ্যাকাউন্টে চালকলের টাকার লেনদেন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সিউড়ি র একটি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে হানা দিয়ে ৩৩০ টি ভুও একাউন্টে হদিস পেয়েছিলেন সিবিআই এর গোয়েন্দারা। তা নিয়ে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতির এজলাসে, একটি তদন্ত রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছিল। কীভাবে ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল, সেদিন তা সিউড়ির ওই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী। আর সেই সংক্রান্ত জেলা থেকে পাওয়া তথ্যই উঠে এসেছে, চাঞ্চল্যকর এই জালিয়াতির ঘটনা। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তৈরির জন্য যে আধারকার্ড পঞ্চায়েতে জমা পড়েছিল, সেই আধারকার্ড দিয়েই খোলা হয়েছে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি। সিবিআইসূত্রে আরও জানা গেছে, অ্যাকাউন্টগুলি যাঁদের নামে তৈরি হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ গ্রাহক, নিজেদের নামটুকুও সই করতে পারেন না।
শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রত মণ্ডলকে তোলা হয়। কিন্তু তাঁর জামিনের জন্য কোনও আবেদনই জানাননি, অনুব্রতর আইনজীবী। সিবিআইয়ের আইনজীবীর সওয়াল শোনার পর, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলার ভর্তি শুনানির দিন ঘোষণা করেন বিচারক। ফলে ততদিন পর্যন্ত ফের জেলহেফাজতে থাকতে হবে অনুব্রতকে। যদিও হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর