ব্যুরো নিউজ, ২১ ফেব্রুয়ারি: ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন এফেক্ট আবিষ্কারের সম্মানে প্রতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটি জাতিয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে পালন করা হয়। কিন্তু কি এই রামন এফেক্ট?
১৯৮৬ সালে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অধীনে ভারত সরকার “রামন এফেক্ট” আবিষ্কারকে স্মরণ করার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে মনোনীত করেছিলেন। রামন এফেক্ট হল সেই আবিষ্কার যা আবিষ্কার করে ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী সিভি রামন ১৯৩০ সালে নোবেল পুরস্কার পান। এর মাধ্যমে রামন আবিষ্কার করেছিলেন, যখন আলোর একটি প্রবাহ একটি তরলের মধ্য দিয়ে যায়, তখন তরল দ্বারা বিক্ষিপ্ত আলোর একটি ভগ্নাংশ ভিন্ন রঙের হয়। এই আবিষ্কার অবিলম্বে বিজ্ঞানমহলের জন্য যুগান্তকারী।
রমন প্রভাব বা রমন বিক্ষেপণ, হচ্ছে ফোটন কণা সমূহের অস্থিতিস্থাপক বিকিরণ। ১৯২৮ সালে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ও তার ছাত্ৰ কে এস কৃষ্ণন তরল পদার্থে “রমণ প্ৰভাব” বা “রামন এফেক্ট” আবিষ্কার করেন। চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামনের নামানুসারে এটির নামকরণ করা হয়।
কী এই ‘রামন এফেক্ট’?
খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে ‘রামন প্রভাব’ হল যখন আলোর একটি প্রবাহ তরলের মধ্য দিয়ে যায়, তখন তরল দ্বারা বিক্ষিপ্ত আলোর একটি ভগ্নাংশ ভিন্ন রঙের হয়। এটি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের কারণে ঘটে, যখন একটি আলোক রশ্মি অণু দ্বারা বিচ্যুত হয়।
সাধারণভাবে, আলো যখন কোনও তরল বা কাঁচের কোনও বস্তুর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে, তা প্রতিফলিত হয় বা প্রতিসৃত হয় বা পাঠানো যায়। আলো বিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় বিজ্ঞানীরা যে বিষয়গুলি দেখেন তা হল যে কণাটির সঙ্গে এটি যোগাযোগ করে তার শক্তি পরিবর্তন করতে সক্ষম কিনা। রামন প্রভাব হল, যখন আলোর শক্তির পরিবর্তন পর্যবেক্ষণাধীন অণু বা উপাদানের কম্পনের দ্বারা প্রভাবিত হয়, যার ফলে এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটে।
“এ নিউ টাইপ অফ সেকেন্ডারি রেডিয়েশন” শিরোনামে নেচার পত্রিকায় তাদের প্রথম প্রতিবেদনে সিভি রামন এবং সহ-লেখক কে.এস কৃষ্ণণ লিখেছেন যে ৬০টি ভিন্ন তরল নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, এবং সব একই ফলাফল দেখিয়েছে। সেই ফলাফলে বিক্ষিপ্ত আলোর একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ ভিন্ন রঙের ছিল। রামন বলেছিলেন, “একটি ঘটনা যার সর্বজনীন প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিতে হবে।” রামন স্পেকট্রোস্কোপ ব্যবহার করে এই পর্যবেক্ষণগুলি যাচাই করেন এবং ৩১ মার্চ, ১৯২৮-এ ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিক্স-এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
১৯২১ সালে জাহাজে চেপে ইউরোপ যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরের জলে নীল আলোর বিচ্ছুরণ দেখে এই ভাবনা মাথায় আসে তাঁর। এরপর ল্যাবরেটরিতে বসে তিনি মার্কারি ল্যাম্প ও বরফের টুকরো দিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। এই পরীক্ষার ফল তিনি প্রকাশ করেছিলেন ১৯২৮-এ।