ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৩ মেঃ মোকা কেন উদ্বেগজনক ? মরসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় মোকা দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ক্রমশই ঘনীভূত হয়ে আরও তীব্রতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি করছে। ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য মে মাস অত্যন্ত অনুকূল সময়। অর্থাৎ এই সময়টা ঝড় হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ব্যতিক্রমী বিষয়টি হল মোকা নামক ঝড়টি দ্রুত তীব্রতা বাড়াতে সক্ষম। আবহবিজ্ঞানীরা এর জন্য দায়ী করেছেন  ভারত মহাসাগরের  গড় তাপমাত্রার ক্রমাগত বৃদ্ধিকে।

আবহবিদদের মতে, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ হ্রাস পেয়েছে, তবে এই ঘটনাটি আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের  কার্যকলাপ বৃদ্ধি এবং এর তীব্রতার  সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতিক।

ঘূর্ণিঝড় তৈরির প্রক্রিয়ার পরিবর্তন হয় না তবে আবহাওয়ার অবস্থার পরিবর্তন হয়। সাম্প্রতিক অতীতে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে তীব্রতর হচ্ছে। এর কারণ শুধু সমুদ্র-পৃষ্ঠের তাপমাত্রার (SSTs) বৃদ্ধি নয়, সমুদ্রের তাপ সামগ্রীর (OHC) বৃদ্ধিও। এর পূর্বে সিস্টেমটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হওয়ার আগে ২ থেকে ৩ দিন সময় নিত কিন্তু বর্তমানে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে মাত্র এক দিন সময় লাগে। বায়ুমণ্ডল শুধুমাত্র SST এর সাথেই নয়, সমগ্র মহাসাগরের সাথেও পারস্পরিক ক্রিয়া সংঘটিত করে।

সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং মহাসাগরের তাপ সামগ্রী উভয়ই ভবিষ্যতে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ মহাসাগরের উপরে একটি উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশ থাকবে এবং যা বাষ্পীভবনের জন্য আরও শক্তি বরাদ্দ করবে, এতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কার্যকলাপ এবং বৃষ্টিপাতের আরও সুবিধা হবে। তুলনামূলক ভাবে ঘুর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা কমলেও অধিক তীব্রতা সম্পন্ন ক্যাটাগরি ৪ ও ৫ ধরণের ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ব্যারিয়ার স্তর হল সমুদ্রের উপরের এবং নীচের স্তরগুলির মধ্যে একটি স্তর, যে স্তরটি ক্রমবর্ধমান সমুদ্রের তাপ সামগ্রীর (OHC) সাথে আরও শক্তিশালী হচ্ছে, তাই তাপ সমুদ্রের নীচের স্তরে প্রবেশ করছে না। ঘূর্ণিঝড়গুলি OHC অনুসরণ করে আর সেই দিকেই ধাবমান হয় যেদিকে এর পরিমাণ বেশি, এবং এই প্রবণতা আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর উভয় ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেখানে উপকূলের কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গেই সাধারণত ঘূর্ণিঝড়গুলি দুর্বল হয়ে যায় বায়ুর কম আর্দ্রতা আর দ্রুত গতি পরিবর্তনের কারণে । যাদিও, আজকাল ঘূর্ণিঝড়গুলি উপকূলের কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও তাদের শক্তি ধরে রাখে।

একটি সমীক্ষা অনুসারে বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোজেনেসিস ৮% কমে যেতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বহুগুণ বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়গুলি আজকাল ধারাবাহিকভাবে অনেক দিন যাবৎ তাদের শক্তি ধরে রাখতে পারে। যতক্ষণ মহাসাগর উষ্ণ থাকবে এবং বাতাস অনুকূল থাকবে, ততক্ষণ ঘূর্ণিঝড়গুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের তীব্রতা বজায় রাখবে।

তবে উপকূলের কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গেই সাধারণত ঘূর্ণিঝড়গুলি দুর্বল হয়ে যায় বায়ুর কম আর্দ্রতা আর দ্রুত গতি পরিবর্তনের কারণে। যাদিও, আজকাল ঘূর্ণিঝড়গুলি উপকূলের কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও তাদের শক্তি ধরে রাখছে।

গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় হল সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলির মধ্যে একটি যার ফলে গত ৫০ বছরে সারা বিশ্বে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। উপকূলরেখা বরাবর উচ্চ জনঘনত্বের কারণে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর সহ ভারত মহাসাগর অঞ্চল বিশেষ উদ্বেগজনক। (EVM News)

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর