ব্যুরো নিউজ, ৯ অক্টোবর: মন্দির রক্ষা করায় কমিটিকে ‘সন্ত ঈশ্বর সন্মান’ কেন্দ্রের
পরিত্যক্ত তিনশো বছরের ইতিহাস। অবহেলায় ধ্বংসের পথে মালদহের প্রাচীন ইতিহাসের চিহ্ন গৌড়ের পাতাল চণ্ডী মন্দির। সেই ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতেই গ্রামবাসীদের আপ্রাণ লড়াই। এবার ইতিহাস সংরক্ষনের সেই প্রচেষ্টাকে সম্মান জানালো কেন্দ্র সরকারের একটি বেসরকারি সংস্থা। ‘সন্ত ঈশ্বর সন্মান’ পেল পশ্চিমবঙ্গের মালদার পাতাল চণ্ডীকল্যাণ সমিতি।
প্রাচীন ইতিহাস সংরক্ষণের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে এই মন্দিরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকেও তুলে ধরেন স্থানীয়রা। প্রথমে প্রাচীন মন্দিকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীরা তৈরি করেন একটি কমিটি। এরপর শুরু হয় প্রাচীন গৌড়ের পাতালচন্ডী মন্দিরের উন্নয়নের কাজ। এরপর ধীরে ধীরে পাতালচণ্ডী মন্দিরকে ঘিরে তৈরি হয় একাধিক দেব দেবীর মন্দির। মন্দিরের চারপাশের শান্ত গ্রাম বাংলার পরিবেশ মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
মালদহের ইংরেজবাজারের মহদিপুর ও যদুপুর ১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ের ধ্বংসাবেশ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৌড়ের ধ্বংসাবেশ সংরক্ষণ করে পর্যটন মানচিত্রে স্থানও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গৌড়ের অধীনেই অবস্থিত প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন পাতাল চণ্ডী মন্দিরের সংরক্ষণের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ইতিহাসবিদদের মতে, সেন আমলে গৌড়ে এই মন্দির তৈরি হয়। লক্ষণ সেন তাঁর নিজের রাজধানীর চারিদিকে ৪টি চন্ডীমন্দিরের স্থাপনা করেছিলেন। সেই চণ্ডী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম এই পাতাল চন্ডী।
বর্তমানে মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ১ নং পঞ্চায়েতের কাটাগর এলাকায় অবস্থিত গৌড়ের এই পাতাল চণ্ডী মন্দির। দীর্ঘদিন এই মন্দিরটির চারপাশ জঙ্গলে পরিপূর্ণ থাকায় সংরক্ষণের অভাবে প্রায় ধবংস স্তুপে পরিণত হতে বসেছিল। এমনকি মন্দির চত্বরেও সাধারণ মানুষ আসতে ভয় পেতেন। তবে স্থানিয়দের উদ্যোগে গঠন করা হয় একটি মন্দির কমিটি। এরপর ধীরে ধীরে করা হয় সংরক্ষনের কাজ। এরই পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে গৌড়ের ইতিহাস ও এই প্রাচীন পাতাল চণ্ডী মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কেও অবগত করতে উদ্যোগ নেয় মন্দির কমিটি-সহ এলাকার মানুষ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৌড়ের এই ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি। মন্দির কমিটি মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলে মন্দিরটি সংস্কার করা হয়। এখন বহু মানুষ এখানে আসেন পুজো দিতে। পাশাপাশি গৌড়ের ইতিহাস জানতে ও শান্ত গ্রাম বাংলার পরিবেশকে উপভোগ করতে। এমনকি মন্দিরকে কেন্দ্র করে চলে বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজ। এমনটাই জানান পাতাল চণ্ডীকল্যাণ সমিতির সম্পাদক তরুণ কুমার পণ্ডিত।
তরুণ কুমার পণ্ডিত জানান, ২রা অক্টোবর দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ‘সন্ত ঈশ্বর সন্মান’ পায় পাতাল চণ্ডীকল্যাণ সমিতি। তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মালদহের পাতাল চণ্ডীকল্যাণ সমিতি একমাত্র এই সন্মান পাওয়ায় খুবই খুশি তাঁরা। ইভিএম নিউজ