ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৭ই ফেব্রুয়ারিঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ, বিধান চন্দ্র রায়, প্রফুল্ল সেন, অজয় মুখার্জী, সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় এমন কি বাম জমানায় জ্যোতি বসু কিংবা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের সঙ্গে এক সারিতে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসবে ঠিকই।তবে বাগ্মিতা ও ব্যক্তিত্বের বিচারে মমতা যে এই প্রাক্তনদের থেকে অবশ্যই পিছিয়ে সেই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশের কোন অবকাশ নেই। কিন্তু তাই বলে মনিষীদের সৃষ্টির ইতিহাসকে বিকৃতিকরণ? পঞ্চায়েত ভোটের আগে পুরুলিয়ার জনসভায় এমনই নজির গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
“ জীবনানন্দ রূপসী বাংলা কবিতা লিখেছিলেন, এই পুরুলিয়াকে কেন্দ্র করেই”- মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে বিস্তর চর্চা। বিশেষজ্ঞদের মতে জীবনানন্দ দাসের রূপসী বাংলার সঙ্গে পুরুলিয়ার জেলার ইতিহাসের কোন যোগসাজশ নেই।
এই বিষয়ে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক হিমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জীবনানন্দ দিল্লিতে থাকাকালীন যখন রামযশ কলেজে অধ্যাপনা করছিলেন, সেই সময় তিনি একাধিক কবিতা লিখছিলেন।হিমন্ত বলেন, “আদ্যন্ত নদীমাতৃক বরিশালে বড় হওয়া কবি রুক্ষ-শুষ্ক দিল্লিতে গিয়ে পড়েছিলেন। সেই নস্টালজিয়া থেকেই কবিতা গুলি লিখেছিলেন তিনি।আর রূপসী বাংলা নামও জীবনানন্দের দেওয়া নয়।তিনি নামের একটা আভাস দিয়েছিলেন।তা ছিল ‘বাংলার ত্রস্ত নীলিমা’। তবে পরে, প্রকাশক দিলীপ কুমার গুপ্ত তাঁর কবিতা থেকেই দু’টি শব্দ নিয়ে ‘রূপসী বাংলা’ নামটি দেন।”
তৃণমূলের ব্যাখ্যা মমতা যতবারই পুরুলিয়া গিয়েছেন, ততবারই এই রূপসী বাংলা শব্দবন্ধটি উচ্চারণ করেছেন।এমনকি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রূপসী বাংলা নামে একটি ট্রেনের সূচনাও করেছিলেন।
এই বিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “উনি কবি মানুষ। ওঁর কল্পনায় জীবনানন্দ কখনও মঙ্গলগ্রহেও পৌঁছে যেতে পারেন। সেখানে বসে চাঁদকে নিয়েও কবিতা লিখতে পারেন।ইতিহাসের এমন অভূতপূর্ব কল্পনাশ্রয়ী ব্যাখ্যা একমাত্র কবিতাবিতানের স্রষ্টার পক্ষের দেওয়া সম্ভব।”