ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ২১ জুলাইঃ (Latest News) আমাদের চারপাশে ঝোপঝাড় বা গুল্ম জাতীয় অনেক ধরণের গাছ চোখে পরে। কিন্তু জানেন কি ওই গুল্ম জাতীয় গাছগুলি আমাদের জীবনে কতটা বিপদজনক হতে পারে। বর্তমানে বাংলা তথা সারা ভারতের সর্বত্র ভয়ঙ্কর বিপদজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সূর্যমুখী উপজাতির উদ্ভিদ ‘পার্থেনিয়াম’। যা মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। পার্থেনিয়াম আগাছা ফসলি জমিতে থাকলে ফসলের উৎপাদন প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমিয়ে দেয়। পার্থেনিয়াম আগাছাযুক্ত মাঠে গবাদি পশু চরানো হলে পশুর শরীর ফুলে যায়, তীব্র জ্বর, বদহজম – সহ নানা রোগের উপসর্গ দেখা যায়। হাতে -পায়ে লাগলে হাত-পা চুলকায়, লাল হয়ে যায় এবং পরে ত্বকের ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘনঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে। ১০ মিটার দূর থেকে পার্থেনিয়ামের ফুলের রেণু মানুষের সংস্পর্শে এলে এলার্জি সহ , হাঁপানি, চর্মরোগ, ব্রঙ্কাইটিস সহ নানা রোগের সৃষ্টি হয়। এই আগাছা ৭০ শতাংশ মানুষের চর্মরোগ শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
জন্ম মেক্সিকোয়। আবার ‘The Silent Killer’ নামেও পরিচিত। পার্থেনিয়ামে রয়েছে Sesquiterpene Lactones নামক টক্সিন বা বিষ। এটি বাঁচে তিন থেকে চার মাস। এবং গাছ ৪ থেকে ২৫ হাজারটি বীজের জন্ম দিতে পারে। এই বীজ এতই ছোট যে সাধারণত গবাদি পশুর গোবর, গাড়ির চাকার বা জুতা-স্যান্ডেলের তলার কাদামাটি, সেচের জল ও বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়।
তাহলে যেন নিন কীভাবে পার্থেনিয়াম গাছ ধ্বংস করা হয় :
প্রথমে গাছের গায়ে কেরোসিন স্প্রে করলে পার্থেনিয়াম খুব তাড়াতাড়ি মারা যায়। তবে এতে অনেক অসুবিধা আছে, যেমন- পদ্ধতিটি ব্যয়সাপেক্ষ, কেরোসিন জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়লে জলের ক্ষতি করে।
তাই খুব কম খরচে এটি বিনাশ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ৪ থেকে ৫ লিটার জলে ১ কেজি নুন ভালো করে মিশিয়ে গাছের পাতায় ও গোড়াতে স্প্রে করলে ২ দিনের মধ্যে পার্থেনিয়াম গাছ মারা যাবে।
তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী।
১। বাচ্চাদের এটির থেকে দূরে রাখুন।
২। পার্থেনিয়াম সাফাই করার সময় মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে থাকবেন। এছাড়া ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট পরে থাকা ভালো।
৩। সাফাইয়ের পর জামাকাপড় ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন ও স্নান করে বাড়িতে ঢুকবেন।
আমাদের অসচেতনতার সুযোগ নিয়েই পার্থেনিয়াম এত দ্রুত বংশবিস্তার করছে। তাই সকলের কাছে অনুরোধ, আপনারা নিজেদের চারপাশ পার্থেনিয়াম মুক্ত রাখুন। এই বিষয়ে সচেতনতা ছড়ান ও নিজেরা সুস্থ থাকুন। (EVM News)