ব্যুরো নিউজ, ৩১ ডিসেম্বর: রাম মন্দির নিয়ে মোদীর আসল প্ল্যান কি?
নয়া বছরের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রামলালার মন্দির। আর তা নিয়েই দেশজুড়ে জোর চর্চা। সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সিদ্ধান্ত ও কর্মযজ্ঞকে সমর্থন জানিয়েছেন। আর রামলালার মন্দির নিয়ে ইতিমধ্যেই সকলের উন্মাদনা তুঙ্গে।
তবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উঠছে নানা প্রশ্ন। অযোধ্যায় রামলালার মন্দির প্রতিষ্ঠাকে লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান হাতিয়ার হিসাবেই দেখছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আর তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নও তুলছেন তারা। অনেকে বলছেন রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা তো হবে, তাতে সাধারণ মানুষের পেট ভরবে কি? অযোধ্যায় এতো কোটি কোটি টাকার প্রকল্প, তার বদলে সেই টাকায় সাধারণ মানুষের জন্য কি কিছু করা যেত না? এমনকি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে মোদী সরকারকে তোপও দেগেছে বিরোধী শিবির।
‘মমতার পুলিশে আস্থা নেই’, কেন এই মন্তব্য উদয়নের?
২২ জানুয়ারি ২০২৪-এ উদ্বোধন হবে রামলালার মন্দির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে রামলালার মূর্তি নিয়ে এসে তা গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠা করবেন। এমনকি রামলালার আরতি করবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তবে অযোধ্যায় শুধুমাত্র রামলালাকে প্রতিষ্ঠা করাই প্রধান কাজ নয়। অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার পেছেনে রয়েছে এক মহান উদ্দেশ্য।
অযোধ্যায় রাম মন্দির শুধুমাত্র রামলালার প্রত্যাবর্তন নয়। ভরতীয় সভ্যতার প্রতিক হিসাবে গড়েতোলা হচ্ছে অযোধ্যাকে। যা হিন্দুদের আস্থার প্রতিক। অন্যদিকে দেখলে দেখা যাবে, মুসলিমদের আস্থার প্রতিক হল মক্কা। খ্রিস্টানদের আছে রোম। আর হিন্দুদের?
রামলালার ‘আরতি পাস’ বুকিং শুরু | কীভাবে পাবেন ‘আরতি পাস’?
এদিকে দেখা যায়, গোটা বিশ্বজুড়ে রয়েছেন হিন্দুরা। পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তে হিন্দুদের বাস। এমনকি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও একজন হিন্দু। গোটা বিশ্বে হিন্দুদের গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। তাই গোটা বিশ্বের হিন্দু সমাজের কাছে তাদের আস্থার প্রতিক হিসাবে অযোধ্যাকে গড়ে তুলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মক্কায় যেমন কাবা কোর এরিয়া, রোমের যেমন ভ্যাটিকান সিটি, ঠিক তেমনই অযোধ্যায় প্রায় ৩০ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে কোর এরিয়া। যেখানে প্রাচীন হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন দিক ও বৈচিত্রকে তুলে ধরা হবে তার মধ্যে। অর্থাৎ চোখের সামনে তুলে ধরা হবে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন নিদর্শন ও প্রতিক। এমনকি নয়া প্রজন্মকে তার ধর্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেও এই উদ্যোগ, যেখানে নয়া প্রজন্ম তার ধর্মের ভিতকে দেখবে, চিনবে, জানবে ও বুঝবে। যাতে কু-পথে ভ্রমিত না হয়ে, ধর্মের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও উন্নত ও নয়া প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তোলা হবে অযোধ্যা। শুধু মাত্র যে কোর এরিয়া তৈরি করা হবে এমনটা নয়। এই কোর এরিয়ার বাইরে প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে থাকবে শপিংমল, মার্কেটিং কমপ্লেক্স, গাড়ি পাকিং এরিয়া। অর্থাৎ এই গোটা জায়গাটিকে বানিজ্যিক নগরী হিসাবে গড়েতোলা হবে। একদিকে প্রাচীন সভত্যা যা আমাদের ঐতিহ্য এবং অন্যদিকে উন্নত ও নয়া প্রযুক্তিশীল সভ্যতা যা আধুনিকতার দিক। এই দুই সভ্যতাকেই একই জায়গায় গড়ে তুলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অর্থাৎ ঐতিহ্যকে পেছনে ফেলে নয়, বরং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়েই যে গোটা হিন্দুজাতী আধুনিকতা উন্নয়নশীল প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যেতে পারে তারই এক প্রতিক হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে অযোধ্যাকে। ইভিএম নিউজ