ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৬ মার্চঃ তৃণমূলের সঙ্গে দুরত্ব তৈরির জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের দায়িত্ব দেবের হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নের কমিউনিটি হলে আয়োজিত ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোমোশন’-এর বৈঠকেই অভিনেতা তথা ঘাটালের সাংসদের মানভঞ্জনের উদ্দেশ্যে এই দায়িত্ব তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজি ছিলেননা , সেকথা ঘনিষ্ঠ মহলে আগেই জানিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অভিনেতা-সাংসদ দেব। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজি হবেন কিনা সে বিষয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। আর সর্বশেষ প্রজাপতি বিতর্ক।
সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘প্রজাপতি’ ছবিতে তাঁর পুত্র ‘জয়’-এর ভুমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল দেবকে। এমনকি, অভিজিৎ সেন পরিচালিত এই ছবিতে সহপরিচালকের কাজও করেছিলেন ঘাটালের অভিনেতা- সাংসদ।ছবি মুক্তির মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় টলি বক্স অফিসে ১০ কোটির গণ্ডি পেরোনো প্রজাপতির উড়ান এখনো অব্যাহত। কিন্তু নন্দন প্রেক্ষাগৃহে প্রজাপতি ছবি মুক্তির অনুমতি না দেওয়া এবং তারপর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনয়ের সমালোচনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হতে দেখা গিয়েছিল দেবকে। এই নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায় তাঁকে।
সম্প্রতি ‘বাঘা যতীন’ ছবির শ্যুটিংয়ের মাঝেই ওড়িশা থেকে ফিরে নবান্নের সভাগৃহে উপস্থিত হয়েছিলেন দেব।তাঁর সঙ্গেই ছিলেন বর্তমানে বাংলার পর্যটন বিভাগের দায়িত্বে থাকা বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলের সামনেই মমতা বলেন, “এই দেবকে বাংলার পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করো তো তোমরা! আগে একটা ভাল করে পর্যটন নিয়ে ভিডিও বানিয়ে নাও। তার পর দেবরা মিলে করুক”।
প্রচারের এই ভিডিও বানানোর দায়িত্ব মমতা তুলে দেন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের হাতে। তারপরই দেবের উদ্দেশ্যে মমতার প্রশ্ন, “দেব কিছু বলবে?’তুমি বেঙ্গলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসাবে কাজ করবে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে কিছুটা বিস্মিত দেব তখন এদিক ওদিক তাকাতে শুরু করে। এর পর আবার মমতা তাঁর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আমাদের শাহরুখ আছে। একটা ভিডিয়ো করে দিয়েছিল ও। কিন্তু ও তো খুব ব্যস্ত। সময় পায় না। দেব তুমি বাংলার পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে একটু কাজ করবে?”
শিয়রে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে দল ও দলের কর্তা-ব্যক্তিরা জড়িয়ে পড়ায় স্বভাবতই তৃণমূল এবং খোদ মুখ্যমন্ত্রীর স্বচ্ছতার ভাবমূর্তি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূলের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী দেবের মতন সেলিব্রিটিদের ফেসভ্যালুকে কাজে না লাগালে আসন্ন নির্বাচন গুলিতে দলকে ধুঁকতে হতে পারে বলেই এই মানভঞ্জনের চেষ্টা বলে মনে করছেন বিরোধীরা।