অরূপ পাল, ১৮ এপ্রিলঃ লগ্নিকারী বাঙ্কার হিলের সঙ্গে বিচ্ছেদ হতে চলেছে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের (Mohammedan SC)। ক্লাবের বর্তমান প্রশাসনের কর্তাদের অসহযোগিতার কারনেই  সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বাঙ্কার হিলের কর্ণধার  দীপক সিং। ফলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই  সম্ভবত লগ্নিকারীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হতে চলেছে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। বাঙ্কারহিল এতদিন এই ক্লাবের লগ্নিকারী হিসেবে কাজ করছিল। পারস্পরিক মতভেদ হলেও গাটছড়া কখনই বিচ্ছেদের দিকে যায়নি।  কিন্তু  শেষপর্যন্ত তাল কাটল।  কলকাতা ময়দানের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের  সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতভেদ চলছিল।  কিন্তু  এবার ক্লাবের সঙ্গে  মতভেদ যে জায়গায় গিয়েছে তাতে একসঙ্গে  চলা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন লগ্নিকারও সংস্থার কর্তা দীপক কুমার সিং। এটা ঠিক ক্লাবে লগ্নিকারী আসলেও মহমেডানের সাফল্য সেভাবে আসেনি। সদ্য শেষ হওয়া মরসুমে  বড় কোনও টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি সাদা কালো ব্রিগেড। ডুরান্ড কাপের  পর আই লিগেও  চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা। বাঙ্কারহিল কর্তারা ক্লাবের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পরই জানিয়ে দিয়েছিলেন, দুই বছরের মধ্যে আই লিগ জিতে ময়দানের  অন্য দুই বড় ক্লাবের মতো মহামেডানও দেশের সর্বোচ্চ লিগ, আইএসএল-এ খেলবে। যদিও সেই স্বপ্ন অধরা রয়ে গিয়েছে।  মহামেডান ক্লাবের সচিব ইস্তেয়াক আহমেদ জানিয়েছেন তাদের ক্লাব সমর্থক ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে।  সেখানে সাফল্য না আসলে দায় নিতেই হবে।  কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা অপরিহার্য নয়।  মতের আদান প্রদান ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে।  তবে কোনও সংস্থা চলে গেলেও মহমেডান ক্লাব তার জায়গাতেই থাকবে।

ফুটবলে সাফল্য না আসলেও, মহিলাদের ক্রিকেট লিগে জয় পেয়েছে মহামেডান। সেইসঙ্গে সিএবি ক্রিকেট লিগের মূলপর্বেও ওঠে তারা। কিন্তু এরপরেও লগ্নিকারীর সঙ্গে দূরত্ব কেন?

দীপক কুমার সিং বলেছেন , তারা ক্লাবের উন্নতির জন্যই বরাবর কাজ করতে চেয়েছেন। কিন্তু ক্লাব কর্তাদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই একমত হতে পারেননি তারা। ফলে দূরত্ব বাড়ছিল ক্রমশই।

প্রসঙ্গত ক্লাব এবং লগ্নিকারীর মধ্যে এটিই চুক্তির শেষ বছর।  তার আগেই সোনালি করমর্দন করে ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত  দীপক কুমার সিংয়ের গলায়। সামনেই ইদ, আর এখন পবিত্র রমজান মাস চলছে। তাই এখনই সরকারি ঘোষণা করার পথে হাঁটতে নারাজ তারা। রমজান মাসের পর ইদ উৎসবের আবহ কাটলেই সাংবাদিক সম্মেলন করে সরকারিভাবে জানানো হতে পারে এই সিদ্ধান্ত। যদিও ড্যামেজ কন্ট্রোল করার মরিয়া চেষ্টা ক্লাবের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে।  তবে তা বাড়তি জোর দিয়ে নয়। ফলে বলা যায় লগ্নিকারী তাদের অবস্থান জানালেও ক্লাব কর্তারা কি পদক্ষেপ নেন এবং এই সমস্যা কিভাবে মেটে সেটাও দেখার।  নচেৎ ফের আরেকবার ময়দান লগ্নি চলে যাওয়া দেখবে, যা বাংলার ফুটবলের পক্ষে ভালো দিক নয়।

প্রসঙ্গত এর আগেও বেশ কয়েকবার মহামেডানের সঙ্গে বাঙ্কারহিলের বিচ্ছেদের খবর শোনা গিয়েছিল। যদিও আলোচনার টেবিলে বসে সমস্ত সমস্যা মিটিয়ে নেন দুই পক্ষের কর্তারা। ফলে সমস্যা খুব বেশিদূর এগোয়নি। এ ক্ষেত্রেও কী ঠিক সেই রকমই কিছু হবে? কলকাতা ময়দানে ইনভেস্টরের সঙ্গে ক্লাব কর্তাদের ঝামেলার খবর নতুন নয়।  ইস্টবেঙ্গলের শেষ পাঁচ বছরে দুবার ঘটেছে। কোয়েস  শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে লাল হলুদ বিচ্ছেদের  মতভেদ হয়েছে বহুবার। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই বিনিয়োগকারীদের দাবি ছিল, পুরোনো ধ্যানধারণা নিয়ে ক্লাব চালাতে চাইছেন কর্তারা। আর এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ প্রায় একই। তাই সাবেক ধারণা আঁকড়ে বসে থাকা কর্তারা এবং লগ্নিকারীর  সম্পর্কের টানাপোড়েনে ক্ষতিগ্রস্ত ফুটবল।(EVM News)ইস্টবেঙ্গল ২- ১ মহামেডান

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর