ইভিএম নিউজ ব্যুরোঃ মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ আর গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামের ভুল উচ্চারণ। আর মুখ্যমন্ত্রী উচ্চারণকে কেন্দ্র করেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল গাইঘাটার রাজনীতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতুয়াদের সেই ক্ষোভের আগুনে এক চামচ বাড়তি ঘি দিয়ে, রাজ্যের শাসকদল আর তার সুপ্রিমোকে রীতিমত দুশ্চিন্তায় ফেলে দিলেন, বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের অন্যতম শীর্ষনেতা শান্তনু ঠাকুর। এই বিষয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তিনিয়াও।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার মালদহে একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া সমাজের প্রাতঃস্মরণীয় হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে ‘রঘুচাঁদ’, ‘গরুচাঁদ’ বলেন। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি দাবি উঠেছে, নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনার।
জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী পর পর দুবার হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামের ‘ভুল উচ্চারণ’ আসলে তাঁদের নামের ইচ্ছাকৃত বিকৃতির মাধ্যমে মতুয়া সমাজে অপমান— এরকমই জোর প্রচার শুরু হয়েছে মতুয়া অধ্যুষিত রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন জেলাগুলোতে। আর ঠিক এইকারণেই এ বছরের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট ও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া ভোট হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় কপালে চিন্তার ভাঁজ তৃণমূল শিবিরে।
এই ব্যাপারে ফেসবুক লাইভে এসে শান্তনু ঠাকুর বলেন, “বাধ্য হলাম লাইভে আসতে৷ ৩১ তারিখ মালদহের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মতুয়া সম্প্রদায়, মতুয়াদের ধর্ম এবং ঠাকুর বাড়ি সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন৷ উনি নাকি বড় মায়ের সেবা করেছেন! তাই যদি হবে তাহলে সেই আরাধ্যের নাম জানেন না? নাকি উনি আপার কাস্টের মানুষ বলে সিডউল কাস্টের মানুষকে অপমান করছেন?’’
এদিকে বনগাঁ উত্তর বিজেপির বিধায়ক অশোক কীর্তিনিয়া মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সবাইকে বলব, ঢঙ্কা, কাঁসি নিয়ে রাজপথে নামুন৷ উনি বলেন, মতুয়াদের জন্য অনেক কিছু করেছেন৷ সেটা কি ওনার বাপের টাকায় করেছেন নাকি? উনি বাংলার মানুষের টাকায় কাজ করেছেন৷ আগামীদিনে মানুষ এটা বুঝিয়ে দেবে৷ সংখ্যালঘুর স্টেজে তো ভুলভাল বলেন না! এর থেকেই স্পষ্ট উনি এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছেন৷ মানুষ ওকে নির্বাচনে বুঝিয়ে দেবে৷’’
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের বিরুদ্ধে এর আগেও জাতীয় সঙ্গীত ভুলভাবে গাওয়ার অভিযোগে একটি ম্মামলা দায়ের হয়েছিল মহারাষ্ট্রে। যদিও সেই মামলাটি থেকে সম্প্রতি আদালত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ দিয়েছেন। এদিকে হরিচাঁদ-গুরচাঁদ ঠাকুরের নাম বিকৃতভাবে উচ্চারণ করার ইস্যুতে মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূল শিবির।