ব্যুরো নিউজ, ৯ জানুয়ারি: ভারতের স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নেওয়া নেতাজির পদক্ষেপ
তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নামে তিনি আমাদের সবার কাছে অতি পরিচিত। ১৮৯৭ সালের ২৩ শে জানুয়ারি উড়িষ্যার কটকের এক কায়স্থ পরিবারে তাঁর জন্ম। তিনি ছিলেন তাঁর পিতা জানকীনাথ বসু ও মাতা প্রভাবতী দেবীর নবম সন্তান। তাঁর বাবা জানকীনাথ বসু একজন সফল সরকারি আইনজীবী ছিলেন।
সুভাষচন্দ্র মনে করতেন, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর অহিংসা ও সত্যাগ্রহের নীতি ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৩৯ সালের ৩রা মে সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের সত্বর মুক্তি ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। এর ফলে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১১ বার কারারুদ্ধ করে। তার বিখ্যাত উক্তি, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো’।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরেও তার মতাদর্শে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তিনি এই যুদ্ধে ব্রিটিশদের দুর্বলতাকে সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন। এই মর্মে যুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করেন। ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও জাপান ভ্রমণ করেন। জাপানিদের সহযোগিতায় তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ পুনর্গঠন করেন। পরে তিনি এই ফৌজের নেতৃত্ব প্রদান করেন। এই বাহিনীর সৈনিকেরা ছিলেন মূলত ভারতীয় যুদ্ধবন্দি ও ব্রিটিশ মালয়, সিঙ্গাপুরসহ, দঃ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত মজুরেরা। জাপানের আর্থিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় তিনি নির্বাসিত আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্ফল ও বহ্মদেশে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ও অন্যান্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোনো কোনো ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ সুভাষচন্দ্রের সমালোচনা করেছেন। এমনকি কেউ কেউ তাকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন।উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। জওহরলাল নেহরু সহ অন্যান্য যুবনেতারা তাকে সমর্থন করেন। শেষ পর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রেস পূর্ণ স্বরাজ মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়। ভগৎ সিং- এর ফাঁসি ও তার জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। সুভাষচন্দ্র গান্ধী আরউইন চুক্তি বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। তাকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। ইভিএম নিউজ