ব্যুরো নিউজ ১৯ মে : সুইজারল্যান্ডের তিব্বত বিষয়ক সংসদীয় দলের সংসদ সদস্যরা শনিবার ১১তম প্যানচেন লামার অন্তর্ধানের ৩০তম বার্ষিকীতে চীন সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। কঠোর ভাষায় দেওয়া এক বিবৃতিতে, সংসদ সদস্যরা ১৯৯৫ সালের ১৭ মে তৎকালীন ছয় বছর বয়সী গেদুন চোয়েক্যি নিমা ও তাঁর পরিবারকে অপহরণ করার জন্য বাম শাসিত চীনা সরকারের তিব্র নিন্দা করেন।
সুইস সংসদ সদস্যরা সুইস সরকার বা ফেডারেল কাউন্সিলকে গেদুন চোয়েক্যি নিমা ও তাঁর পরিবারকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানানোর অনুরোধ করেছেন।
তিব্বতের জন্য সংসদীয় দলের সহ-সভাপতি নিকোলাস ওয়াল্ডার বলেন, “পিআরসি-র লক্ষ্য স্পষ্ট: ‘সরকারি’ প্যানচেন লামাকে নিয়ে এই বিশাল প্রচারণার মাধ্যমে, পিআরসি-র কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ তিব্বতে ছদ্ম-ধর্মীয় স্বাধীনতা দেখাতে চায়।”
সংসদ সদস্যরা চীনা সরকারের কাছে গেনদুন চোয়েক্যি নিমা ও তাঁর বাবা-মায়ের অবস্থান সম্পর্কে জানানোর, বৌদ্ধ অবতারদের অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার এবং তিব্বতের তিব্বতিদের তাঁদের পূর্ণ সাংস্কৃতিক অধিকার, ধর্ম ও তিব্বতি ভাষায় শিক্ষার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ওয়াল্ডার আরও বলেন, “পিআরসি-র আসল লক্ষ্য হল তিব্বতি বৌদ্ধ ব্যক্তিত্বদের পুনর্জন্ম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে পিআরসি-র নিয়ম অনুযায়ী ১৪তম দালাই লামার উত্তরসূরি নিয়োগের ভবিষ্যৎ পথ প্রশস্ত করা।”
আইনপ্রণেতারা তাঁদের সরকারকে বিশেষ করে তিব্বতি বৌদ্ধ ও তাঁদের ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবিলম্বে সমাপ্তি ঘটানোর জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান, যার মধ্যে রয়েছে জোরপূর্বক অন্তর্ধান, গ্রেপ্তার, শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে কোনো বিচার ছাড়াই ভিক্ষু, নান ও অন্যান্য ব্যক্তিদের দীর্ঘকাল ধরে আটক রাখা।
জেনেভার তিব্বত ব্যুরোর থিনলে চুক্কি সুইস সংসদ সদস্যদের জারি করা বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “কোনো ব্যক্তির তিন দশক ধরে জোরপূর্বক অন্তর্ধান মানবাধিকার ও মর্যাদার চরম লঙ্ঘন। ১১তম প্যানচেন লামা গেদুন চোয়েক্যি নিমার ক্ষেত্রে, এটি কেবল একজন ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং তিব্বতি জনগণের নিজস্ব ধর্মীয় নেতা নির্বাচন ও উপাসনার অধিকারও লঙ্ঘন। এটি কেবল তিব্বতি বৌদ্ধদের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও রীতিনীতিকেই দুর্বল করে না, বরং তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে তিব্বতিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণও।”
তিনি আরও বলেন, “এটি মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং জোরপূর্বক অন্তর্ধান থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের ঘোষণাসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী। চীনা সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান জানানো ও তা কার্যকর করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১১তম প্যানচেন লামা গেদুন চোয়েক্যি নিমা ও তাঁর পরিবারকে মুক্তি দেওয়া।”