ব্যুরো রিপোর্ট, ইভিএম নিউজঃ সরকারের চোখরাঙানি আর আদালতের নির্দেশের পরেও এড়ানো গেল না, ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতি। উত্তরের কোচবিহার থেকে দক্ষিণের কাকদ্বীপ, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের যৌথমঞ্চের ডাকা দু’দিনের লাগাতার কর্মবিরতিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ল আদালত এবং জেলায় জেলায় রাজ্য সরকারি একাধিক দফতরে।
প্রথম কাজের দিন সোমবার সকালে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির হলেন, সেখানকার কর্মীরা। কিন্তু হাজিরা দিলেও কোনও কাজ করলেন না। পরিবর্তে আদালত চত্বরে বসেই ডি এর দাবিতে চলল স্লোগান। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়ল, জেলা আদালতের রোজকার কাজকর্মে। বিচার চাইতে আসা দূরদূরান্তের মানুষকে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হল।
একই ছবি দেখা গেল, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ডায়মণ্ডহারবার মহকুমা আদালতেও। বকেয়া ৩৫ শতাংশ ডিএ সম্পূর্ণ মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের, দুদিনের এই কর্মবিরতির আহ্বানকে নৈতিক সমর্থন জানিয়ে, সোমবার সকাল ১১ টা থেকে এই আন্দোলনে যোগ দেন, ডায়মণ্ডহারবার মহকুমা আদালতের কর্মচারীরা। কর্মবিরতির জেরে সমস্যায় পড়েন আদালতে আসা দূরদূরান্তের বিচারপ্রার্থীরা।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারেও জেলা আদালতের সামনে এদিন কর্মবিরতির সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করেন, আদালতের কর্মচারীরা।
শিলিগুড়িতেও একই চিত্র। এখানে দুটি সরকারি স্কুলে পেনডাউন।শিক্ষক-শিক্ষিকারা অন্যান্য কর্মচারীরা, কর্মবিরোধী পালন করলেন। মহার্ঘ ভাতা পাশাপাশি স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিও উঠলো।ঝাড়গ্রাম আদালত চত্বরে বুকে ব্যাচ পড়ে কর্মবিরতি পালন করলেন সরকারি কর্মচারীরা। আদালত ছাড়াও অন্যান্য সরকারি দফতরের কর্মচারীদের একাংশও সামিল হলেন এই আন্দোলনে।দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের সরকারি কর্মীরাও কাজে যোগ দেননি। তবে জেলা প্রশাসনিক ভবনে কাজকর্ম ছিল স্বাভাবিক।
সব মিলিয়ে নবান্নর কড়া নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জেলায় জেলায় সরকারি দফতর এবং আদালতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এই দু’দিনের কর্ম বিরতিতে কার্যত থমকে রইল যাবতীয় কাজ। একই সঙ্গে তুলে দিয়ে গেল এক বিরাট প্রশ্ন। এই ডিএ আন্দোলনে সামিল না হওয়ার জন্য সরকারি স্তরে জারি হয়েছিল নির্দেশিকা। সেই নির্দেশিকা যে আসলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, নবান্নের আনাচে-কানাচে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সে কথা। কিন্তু ঘটনা হল সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েই রাজ্যজুড়ে সরকারি কর্মচারীদের এই দু’দিনের পেন ডাউন। ডিএ-র দাবিতে গত বেশ কিছুদিন ধরে রাস্তায় নেমে আন্দোলনও করছেন সরকারি কর্মচারীরা। তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেস এবার সরকারি কর্মচারীদের ওপর থেকেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে? রাজনৈতিক মহলে কিন্তু এই প্রশ্ন উঠছে।