ব্যুরো নিউজ, ১০ জানুয়ারি: নক্ষত্র রাশিদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শিল্পীকূল

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনন্য প্রতিভা রাশিদ খান আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন ২৪ ঘণ্টা আগে, আর সেই সঙ্গে শোকের ছায়া ভারতের সমস্ত সঙ্গীত প্রেমীদের মধ্যে।  সরোদ বাদক উস্তাদ আমজাদ আলী খান বলেছেন, রাশিদ ছিল দেবদত্ত প্রতিভার অধিকারী। নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। আজ আমরা শকে ডুবে আছি। দেশ এক অনন্য প্রতিভাদহ শিল্পীকে হারালো। আমি ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি অর সঙ্গীত যাত্রা এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। পণ্ডিত ভিমসেন জোশীর তালিমে অনেক কিছু শিখেছিলেন রাশিদ। বাড়িতে ডেকে রাশিদের গান শুনে ছিলেন, আর পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা। তা নিতে চাননি রাশিদ। জোশীজি বলেছিলেন, পারিশ্রমিক না নিয়ে কখনো গাইবে না।

মিড ডে মিলের মান খতিয়ে দেখতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল

পণ্ডিত দেবজ্যোতি মিশ্র বলেছেন, আমার প্রানের বন্ধু ছিল রাশিদ। উস্তাদ নিসার হুসেন খান ছিল তাঁর পূর্বসূরি। আমার সঙ্গে তাঁর সমঝোতা ছিল ভীষণ ভালো। দারুণ রান্না কোরতে পারতো। তার মধ্যে বিরিয়ানি রান্নায় ছিল ভীষণ পটু। এখনো বিশ্বাস কোরতে পারছিনা যে, রাশিদ নেই। তাঁর এভাবে চলে যাওয়া অকল্পনীয়। ওদের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকতাম। তখন ও থাকতো মাঝেরহাঁটের কাছে। নিউআলিপুর সংলগ্ন এলাকায়। শৈশবের বন্ধু আমার কাঁদিয়ে দিয়ে হারিয়ে দিল।  চলে গেল আমায় ফাঁকি দিয়ে। আমাকে ভীষণ নিঃসঙ্গ করে দিল।

পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ন মুজুমদার বলেছেন, রাশিদের শায়িত নশ্বর দেহ দেখে কিছুতেই মনকে শান্ত রাখতে পারছিলাম না। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছিল, রাশিদ সাড়া দাও। কিন্তু, ও তো দেবে না। রাশিদের বিয়েতে তাঁর স্ত্রীকে সাজিয়েছিল আমার মা। ওর আচরণ ছিল শিশু সুলভ। মানবিক বোধ ছিল, দান- ধ্যান, সমাজসেবা, দরিদ্র মানুষকে সাহায্য, অসুস্থ মানুষকে রক্তদান এসবই করত। আর ফিরবে না ও। আমাদের পরিবারের যেনও একটা সুতো ছিঁড়ে গেল। প্রচুর শূন্যতা আর স্মৃতির ডালি সাজিয়েরেখে রাশিদ চলে গেল। পণ্ডিত তন্ময় বসু বলেছেন, ভিন রাজ্যে খবর পেয়ে মনে হচ্ছিল আমার চার দিকটা যেনও থমকে গেছে। আমার ছোটবেলাকার বন্ধু। ৪৫ বছরের সম্পর্ক। একসঙ্গে বহু অনুষ্ঠান করেছি। বহু অনুষ্ঠান কোর্টে গিয়ে একসঙ্গে থেকেছি। বহু জায়গায় বেড়িয়েছি একসঙ্গে। আজ শুধু আমার  প্রার্থনা করার দিন।

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে পটু অর্থনীতিবিদ সুগত মার্জিত বলেছেন, এতো মর্মান্তিক খবর শুনতে হবে ভাবিনি। এই মুহূর্তে আমার হাত দিয়ে কোনও লেখা বেরোনোর অবস্থা নেই। অনেক ছোটবেলা থেকে রাশিদকে দেখেছি প্রতিভার নিরিখে উস্তাদ বাড়ে গুলাম আলী খাঁ, উস্তাদ আমীর খাঁ-দের মতো অনন্য প্রতিভাধর শিল্পীদের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। আমি ওকে বড্ড ভালবেসে ফেলেছি। সরোদ বাদক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বলেছেন, রাশিদের কণ্ঠ ওর মস্তিষ্কের বৃত্তের মতো। ও যা ভাবছে, কণ্ঠ দিয়ে তাই প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। ঈশ্বরের অংশ না হলে এমন শক্তি কেউ  অর্জন করতে পারে না।

পণ্ডিত দেবজ্যোতি মিশ্র বলেছেন, আমার চেয়ে বছর পাঁচেকের ছোট হলেও বন্ধুর মতো ওর সঙ্গে মিশেছি। ওর মতো শিল্পী শুধু ভারতে নয়। গোটা বিশ্বেই কম জন্মায়। ওর সরলতা এমন ছিল যে, ঈশ্বরও ওর বন্ধু হতে পারতো। রাশিদ ছিল আলোর মতো। ওর চলে যাওয়ার খবর পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলাম। অপূরণীয় ক্ষতি হল সঙ্গীত জগতের। গীতিকার গুলজার বলেছিলেন রাশিদকে মুম্বাই আস্তে হবে না। আমি কলকাতায় ওর কাছে যাবো। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর