জাহাঙ্গীর বাদশা, পাঁশকুড়াঃ গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে আসছে পঞ্চায়েতভোট। আর তার আগে শিক্ষকনিয়োগ থেকে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনাসহ নানা ক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে, জনমানসে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র অসন্তোষ। সেই অসন্তোষের আঁচ থেকে দলের ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতে, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ শীর্ষক নতুন এক প্রকল্প  জনসাধারণের জন্য শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই প্রকল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে, দলের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া বিরূপ মনোভাব দূর করার পাশাপাশি, নীচুতলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় অভিযান শুরু করেছেন, শাসকদলের প্রথমসারির নেতাকর্মী, বিধায়ক আর সংসদরা। সেই উপলক্ষেই বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পৌঁছে যান তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগরে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির উদ্বোধনের পর এলাকায় জনসংযোগের কাজও শুরু করেন কুণাল। আর তখনই তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে, এখানকার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন পাঁশকুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ওমর আলীর ছেলে মুসলেম আলী। প্রাক্তন বিধায়কপুত্রের সঙ্গে গলা মেলান গোবিন্দপুরর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্য একটি গোষ্ঠীর লোকজন। এমনকী, অবিলম্বে গোষ্ঠীবিবাদ নিয়ন্ত্রণ সহ এখানকার রাস্তাঘাট ও অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা না হলে, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন বয়কট করা হবে বলেও কুণাল ঘোষকে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ওই লোকজন। তাদের সেই উগ্র মেজাজের সামনে কিছুটা অপ্রস্তুতে পড়ে, জেলা নেতৃত্ব আর প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সুর চড়ান কুণাল। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখানকার সমস্যার সমাধান না হলে তিনি নিজেই বিক্ষুব্ধদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবেন।

তবে বিড়ম্বনার এখানেই শেষ হল না। পাঁশকুড়া এক দলীয়কর্মীর বাড়িতে বুধবার রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কুনাল পৌঁছে যান এখানকার একটি হনুমান মন্দিরে। সেখানে পূজো দেওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা উত্তোলন করেন কুণাল ঘোষ। স্বামী বিবেকানন্দের ১৬০ তম জন্মতিথি উপলক্ষে বীর সন্ন্যাসীকে শ্রদ্ধা জানানোর পর, দলীয় কার্যালয় সহকর্মীদের সঙ্গে চা খেতে খেতে, একটি সাংবাদিক বৈঠকে প্রস্তুতি  নিচ্ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই অন্যতম শীর্ষনেতা। আর তখনই ঘটল নতুন করে বিপত্তি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদককে হাতের সামনে পেয়ে, পাঁশকুড়ার মঙ্গলদারি থেকে ডোবাকুল পর্যন্ত প্রায় দু কিলোমিটার বেহাল রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ উগরে দেন, তৃণমূলেরই কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মী। আর এর পরই দৃশ্যত মেজাজ হারিয়ে ওই ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের পাল্টা ধমক দিতে চেষ্টা করেন, তৃণমূলের এই অন্যতম শীর্ষনেতা। আর এতেই যেন আগুনে ঘি পড়ল। ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, উল্টে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পাল্টা বচসায় জড়িয়ে পড়লেন, তৃণমূলের ওই স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দলীয় কার্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে এসে গাড়িতে ওঠে সটান হাওড়ার দিকে রওনা দিলেন, কুণাল ঘোষ।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর