নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যে নয়া মোড়। কি সেই নয়া মোড় ! কিভাবে মৃত্যু ? হঠাৎ কোথা থেকে এল অস্থিভস্ম ! আজ সেই তথ্য উন্মোচনের প্রথম কিস্তি।
সৌমেন দত্ত :নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্যে নতুন মোড় । চমকে দেওয়ার মতো তথ্য সামনে এসেছে। নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে জিইয়ে থাকা তত্ত্বের কূটকচালিতে নতুন সংযোজন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সচিবালয়ে কর্মরত নেহরুর ব্যক্তিগত সচিবের একটি নোট। আর এই নোটটিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে নতুন তরজা।
নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে সাড়া জাগিয়ে ছিল মনোজ মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট। ২০০৫ সালে পেশ করা এই রিপোর্টে কমিশন পরিষ্কার করে জানিয়েছিল নেতাজির মৃত্যু বিমান দুর্ঘটনায় হয়নি। শুধু তাই নয় তাইওয়ান সরকার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছিল ১৮ ই অগাস্ট ১৯৪৫ শে তাইহোকুতে কোনও বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি । যদিও নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে এর আগে গঠিত শাহনাওয়াজ কমিশন এবং খোসলা কমিশন তাঁদের রিপোর্টে নেতাজির বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তত্ত্বতে সিলমোহর দেয়।
নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যে নিত্যনতুন তত্ত্ব উঠে এসেছে ।সরকারি তত্ত্ব মেনে কেউ বলেছেন ,নেতাজির মৃত্যু বিমান দুর্ঘটনায় হয়েছিল। কেউ আবার বলেছেন ,নেতাজি রাশিয়াতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। অনেকে বলেছেন রাশিয়াতে নেতাজিকে বন্দি করা হয়েছিল এবং প্রচন্ড ঠান্ডায় ও নিদারুন শারীরিক অত্যাচারে তাঁর মৃত্যু হয়। আর একটি তত্ত্ব অনুযায়ী নেতাজি তৎকালীন সৌভিয়েত ইউনিয়ন বা আজকের রাশিয়া থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতে প্রবেশ করার পর ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে ফৌজাবাদে গুমনামিবাবা বা ভগবানজি হিসাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে বসবাস করেন। সেই বছরই গুমনামিবাবা বা ভগবানজির মৃত্যু হলে অতি সন্তর্পনে তাঁর সৎকার করা হয়। যদিও মুখার্জী কমিশন ২০০৫ সালে সরকারকে দেওয়া তাঁদের রিপোর্টে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় ভগবানজি নেতাজি নন । কারণ ভগবানজির ডিএনএর সঙ্গে নেতাজির পরিবারের মানুষজনের ডিএনএ মেলেনি।
অন্যদিকে জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রক্ষিত অস্থি ভস্মকে নেতাজির অস্থিভস্ম বলে সরকারি ভাবে দাবি করা হয়। খোদ জওহরলাল নেহরুও এই মন্দিরে গিয়ে নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ছিলেন। যদিও নেতাজির গবেষকরা বলেন ,নেতাজির অন্তর্ধান এবং ভারতে না আসার জন্য জওহরলাল নেহরু দায়ী ছিলেন। ভারতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন এই অস্থিভস্ম দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবি করেছেন। শুধু তাই নয় ,নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ বিভিন্ন সময় বার বার এই অস্থি ভস্ম দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন সরকারের কাছে।
এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এই নথি বা নোট হইচই ফেলে দিয়েছে। এই নথিতে লেখা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ব্যক্তিগত সচিব এম ও মাথাইয়ের নোট পরিষ্কার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রেনকোজি মন্দিরে সংরক্ষিত অস্থিভস্মের পরিচয় নিয়ে।
(ক্রমশ: )


















