অরূপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম, ৬ মার্চঃ গরমে বোধহয় একটু ক্লান্তই লাগছিল। খিদেও পেয়েছিল বেশ। তাই ধীর পায়ে জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে ঢুকে পড়ল সে। সটান হাজির হলো গ্রামের এক গৃহস্থ বাড়িতে। এটাই প্রথম নয় অবশ্য। এর আগেও একাধিকবার এরকম ঘটেছে। গ্রামের মানুষ তার রকমসকম বুঝে গেছেন। তাই হাতি এসে দাঁড়ানো মাত্রই বাড়ির লোকজন সাবমারসিবল পাম্প চালিয়ে দিলেন। আর হাতিও মহানন্দে জল খেলো। শুঁড়ে করে করে জল নিয়ে ছিটিয়ে গাও ভিজিয়ে নিল খানিক। তৃষ্ণা তো মিটলো। কিন্তু শুধু জল খেয়ে তো আর পেটের খিদে বাগ মানে না। তাই এবার তার চোখ গেল কলা গাছের দিকে। পেট পুরে কলা খাওয়া হলো। বেশ কয়েকটা কলা গাছ তাতে উপড়ে গেল অবশ্য, ক্ষতি গৃহস্থের। কিন্তু অতশত ভাবলে পেট ভরবে নাকি? তাই সেদিকে ভ্রুক্ষেপমাত্র না করে, মনের আনন্দে কলা খেয়ে হাতি বাবাজী ধীর পায়ে ফিরে গেল জঙ্গলে। কারোর কোনও ক্ষতি করল না, করেও না কখনও। মানুষগুলো তার পরিচিত হয়ে গেছে তো এতদিনে। গোটা জঙ্গলমহল তাকে চেনে। শান্তশিষ্ট এই হাতির একটি নামও দিয়েছেন জঙ্গলমহলের মানুষ, রামলাল। এদিন সে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের পুকুরিয়া বিটের অরুণদিহিতে এক গ্রামে ঢুকে পড়েছিল। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে চলেছে তার জল খাওয়া, স্নান এবং সবশেষে খাওয়া পর্ব। ওই সময় গ্রামের মানুষ ঘরের ভেতরেই ঢুকে বসেছিলেন। রামলাল জঙ্গলে ফিরে গেলে আবার গ্রামের সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।