সঞ্জয় দাস,পশ্চিম মেদিনীপুর ২৫ ফেব্রুয়রিঃ শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক নেতা মন্ত্রী আর শিক্ষাদফতরের কর্তা জেলবন্দি। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তি এড়াতে আসন্ন বাজেট অধিবেশনে শিক্ষাদফতরের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা না করে গিলোটিলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যসরকার। যদিও, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে জেলায় জেলায় দলীয় প্রচারসভা থেকে গত দশবছরে রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে, আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের দাবি করে যাচ্ছেন, শাসকদলের সর্বোচ্চ নেত্রী থেকে প্রায় সকলেই। তবে সেই গগনবিদারি প্রচারে এবার একরাশ চলে ফেলে দিল, রাজ্যসরকারের বিদ্যুৎ দফতর। রীতিমতো অমানবিকতার নজির গড়ে, বিল বকেয়া থাকার অজুহাতে, এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়ির বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিস। অমানবিক এই ঘটনার জেরে, আপাতত পরীক্ষা চলাকালীন টর্চার লন্ডনের আলোয় পড়াশোনা করতে বাধ্য হচ্ছে, দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের গৌড়দা গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বুদ্ধদেব খাটুয়া। গ্রামসূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। আর সেই সুযোগে স্থানীয় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে, বুদ্ধদেবের বাড়ির বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়ে যায়।
রাজ্য আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস মিলিয়ে, ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় শীত বিদায় নিয়েছে। পড়ছে গরম। আর রাতে সেই গরমের হচ্ছে মশা। এদিকে নিম্নবিত্ত পরিবারের হাতে এই মুহূর্তে বকেয়া ১৪০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল মেটানোর মতো পরিস্থিতি নেই। কিন্তু তাই বলে তো আর পরীক্ষা থেমে থাকতে পারে না। তাই মশারির মধ্যে টর্চের আলো জ্বেলেই বুদ্ধদেব চালিয়ে যাচ্ছে, মাধ্যমিকের প্রস্তুতি।
প্রশ্ন উঠছে, সরকার যদি নিজের মানবিক মুখ তুলে ধরতে, রাজকোষ উজাড় করে মানুষের এত ট্যাক্সের টাকা খরচ করতে পারে, যদি পুজোর জন্য ক্লাবগুলোকে বিদ্যুতের বিলে ছাড় দিতে পারে, তাহলে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থীদের বিদ্যুতের বিষয় কেন এই ধরনের পদক্ষেপ করতে পারবে না?