ইভিএম নিউজ ব্যুরো: পুল্লেল্লা গোপিচাঁদ, পিভি সিন্ধুদের কি তবে দুর্দিন শুরু হল! ব্যাডমিন্টন খেলার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে শাটল কক, সেই শিল্পের উৎপাদনে সাম্প্রতিক অধোগতির তথ্য সামনে আসার পর, এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলা তথা ভারতের ক্রীড়াজগতে। হাওড়া জেলার যে উলুবেড়িয়া শহর একসময় শাটল কক উৎপাদন আর রফতানির জন্য গোটা দেশে প্রসিদ্ধ ছিল, সেখানেই এখন কারিগর আর উৎপাদনে ভাটার টান। যার প্রধান কারণ হল- শাটল ককের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় যে হাঁসের পালক, তার জোগান কমে যাওয়া। আর সেই ভাটার টানে কার্যত রুটিরুজি বন্ধ হতে বসেছে, উলুবেড়িয়ার প্রায় পঞ্চাশ হাজার শাটল কক তৈরির কারিগর ও তাঁদের পরিবারের।
মূলত বোতলের ছিপিতে হাঁসের পালক আঠা দিয়ে লাগিয়ে তৈরি হয়, ব্যাডমিন্টন খেলার এই শাটল কক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই হাঁসের পালকের জোগান কমে যাওয়ায়, দেশি শাটল ককের বাজার দখল করে নিয়েছে বিদেশে তৈরি কক। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো করোনা নামক অতিমারী গত দু’বছর যাবৎ এই মরতে বসা শিল্পের ওপর খাঁড়ার ঘা বসিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলার একান্ত নিজস্ব এই আন্তর্জাতিক শাটল কক শিল্প ও তার শিল্পীদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে, উলুবেরিয়া চেম্বার অফ কমার্স। সম্প্রতিককালে হাওড়া জেলায় আয়োজিত একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে, খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শাটল কক শিল্পের সমস্যা নিয়ে দরবার করেছেন, উলুবেড়িয়ার চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি তমাল ঘোষাল। আর সেই আবেদনে কিছুটা হলেও সাড়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে শাটল কক তৈরীর অন্যতম কাঁচামাল হাঁসের পালকের জোগান বাড়াতে, নদীয়া জেলার হরিণঘাটার ফার্মহাউসগুলিতে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড থেকে এবার হাঁসের বাচ্চা আমদানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
খুব শিগগিরই ৫০ হাজারের বেশি হাঁসের বাচ্চা আমদানি করা হবে ওই সূত্রে জানা গেছে। উলবেড়িয়ার চেম্বার অফ কমার্সের সাভাপতি দাবি, প্রথমদফায় হরিণঘাটায় যে মাদার স্টক আনা হয়েছে, সেগুলি প্রতিপালনের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁসগুলি সরকারিভাবে কিনে নেওয়া হবে। এরপর সেই হাঁসগুলির পালক শাটল কক তৈরির জন্য উলুবেরিয়ার সংশ্লিষ্ট শিল্প এলাকায় পাঠানো হবে।