অরূপ পালঃ ব্যাটারদের পরে এবার চমক দিচ্ছেন বাংলার বোলাররা। দিনের শেষ দফায় ব্যাট করতে নেমে মধ্যপ্রদেশ দুই উইকেটে ৫৬। ক্রিজে রয়েছেন সারাংশ জৈন (১৭) এবং অনুভব আগরওয়াল(৪)। বাংলার ৪৩৮ রান তাড়া করতে নেমে স্বস্তিতে নেই মধ্যপ্রদেশ। দুই ওপেনার যশ দুবে(১২)এবং হিমাংশু মন্ত্রী(২৩) ফিরে গিয়েছেন। উইকেটের অসমান বাউন্স এবং ঘুর্নিকে কাজে লাগাতে সফল বাংলার ওপেনিং বোলিং জুটি শাহবাজ আহমেদ এবং মুকেশ কুমার। চমৎকার লাইন ও লেংথে বল রেখে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের চাপে রাখার কাজটা শুরু করেছিলেন ওরা দুজনেই। পরবর্তী সময়েও সেই চাপ জারি রাখলেন আকাশদীপ, ঈশান পোড়েল, প্রদীপ্ত প্রামাণিক, করনলালরা। মধ্যপ্রদেশকে ভাঙেন আকাশদীপ এবং ঈশান পোড়েল। আপাতত ৩৮২ রানে পিছিয়ে মধ্যপ্রদেশ।
এদিন ৩০৭ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলা। ৪৩৮ রানে ইনিংস শেষ। অর্থাৎ বাকি ছয় উইকেট পড়েছে মাত্র ১৩১ রানে। ফলে রানের পাহাড়ে চড়া হল না। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে প্রাথমিক ঝটকা সামলে দলকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিল অনুস্টুপ মজুমদার এবং সুদীপ ঘরামির ব্যাট। জোড়া সেঞ্চুরিতে দলের ইনিংসে পাঁচশো রানের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি এবং বাকিরা তা সফল করতে ব্যর্থ। প্রথম দিনের ভুল শুধরে মধ্যপ্রদেশের বোলাররা দিনের শুরু থেকেই সঠিক লাইনে বল করতে থাকেন। ফলে ম্যাচের যে রাশ বাংলার ব্যাটারদের হাতে ছিল তা আলগা হতে থাকে। পাঁচদিনের ম্যাচে যত বেশি সময় ক্রিজে থাকা যাবে তত রান পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। অনুস্টুপ এবং সুদীপ সেই তত্ত্বেই বড় ইনিংস গড়েছিলেন। শাহবাজ আহমেদ এবং মনোজ তিওয়ারি সেই ভাবনায় ব্যাট করতে শুরু করলেও প্রত্যাশিত আত্মবিশ্বাস দেখা যায়নি। শাহবাজ আহমেদ ব্যক্তিগত ছয় রানে শুরু করে ১৪ রানে ফিরে যান। গৌরব যাদবের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক হিমাংশু মন্ত্রীর হাতে ধরা পড়েন। প্রাথমিক নড়বড়ে ভাব কাটিয়ে মনোজ সবে থিতু হচ্ছিলেন। কিন্তু কুমার কার্তিকেয়র একটি বল আচমকা লাফিয়ে ওঠায় সামলাতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৪২ রানে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের হাতে ধরা পড়েন।
৩২৩ রানে পাঁচ উইকেট থেকে ৪০১ রানে ছয় উইকেট পড়ে বাংলার। শাহবাজের পরে মনোজ দলকে টানছিলেন অভিষেক পোড়েলকে সঙ্গী করে। মনোজ ফিরে যাওয়ার পরে ইনিংস গড়ছিলেন অভিষেক পোড়েল। তাঁর ১০২ বলে আটটি বাউন্ডারিতে সাজানো ৫১ রানের ইনিংস শেষ হয় রান আউটে। অভিষেকের আউটের জন্য প্রদীপ্ত প্রামাণিকের স্বার্থপরতা দায়ী। ভুল বোঝাবুঝিতে তৈরি হওয়া রান আউটের পরিস্থিতিতে প্রদীপ্ত স্বার্থ ত্যাগ করলে সেট হয়ে যাওয়া অভিষেকের ইনিংস বড় হতে পারত। আখেরে লাভ হত দলের। ৪১৯ রানে অভিষেকের ফিরে যাওয়ার পরে পরবর্তী ১৯ রানে বাংলার ইনিংস শেষ। প্রদীপ্ত(২১),আকাশদীপ(৬),মুকেশকুমার(২), ঈশান পোড়েল(০) ফিরে যান।
হোলকার স্টেডিয়ামের বাইশগজ ক্রমেই নিষ্প্রান হচ্ছে। এই উইকেটে মধ্যপ্রদেশ ব্যাটারদের চাপের পাহাড়ের সামনে দাঁড় করাতে আরও অন্তত চল্লিশ রান দরকার ছিল। তাহলে বোলারদের কাজটা স্বস্তির হত। দেশের সেরা বোলিং আক্রমন বাংলার। সাড়ে চারশোর কাছাকাছি রানের পুজি নিয়ে মধ্যপ্রদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলার কাজটি আকাশদীপ,ঈশান, মুকেশ, শাহবাজদের হাতে। পিচে কামড় নেই। তাই ধৈর্য্য এবং স্নায়ুর লড়াইয়ে এই ম্যাচের ভবিষ্যত দাঁড়িয়ে।