ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ২৯ মার্চঃ আলিপুরদুয়ারে প্রতারণার ছক বানচাল করে বিহারের একটি গ্যাংয়ের ৫ পাণ্ডাকে গ্রেফতার করল আলিপুরদুয়ার থানার অ্যান্টি-ক্রাইম টিম। মঙ্গলবার বিকেল থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। আর তারপই পুলিশের জালে ধরা পড়ে ৫ প্রতারক।

এদিকে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা আলিপুরদুয়ার জেলা শহরে। পুলিশ সুত্রে খবর, জয়গাঁ থানা এলাকায় দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের হাতে প্রায় দু’লক্ষ নকল নোট ধরিয়ে আসল টাকা নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। এই খবর জানাজানি হতেই আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সামনে ফাঁদ পেতে বসে থাকেন পুলিশ কর্মীরা। আলিপুরদুয়ার কলেজ হল্ট এলাকায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মূল শাখার সামনে প্রতারণায় ব্যবহৃত গাড়িটি হঠাৎই চোখে পড়ে পুলিশ কর্মীদের। তখনই তাঁরা  অনুমান করেন, আলিপুরদুয়ারের এই স্টেট ব্যাঙ্কেও  প্রতারণার ছক কষেছে এই চক্র। প্রতারণার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার আগেই গাড়ির ভিতর থাকা দুই অভিযুক্তকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন আলিপুরদুয়ার থানার অ্যান্টি ক্রাইম টিমের পুলিশ কর্মীরা।

ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় চক্রের ওপর তিন অভিযুক্ত। কিন্তু আটক হওয়া দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের উদ্দেশ্যে খোঁজ শুরু করলে আলিপুরদুয়ার চৌপথি এলাকা থেকে দু’জন এবং বড়বাজার এলাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  বাজেয়াপ্ত করা হয় অসমের নম্বর প্লেট লাগানো একটি গাড়িও। এছাড়াও গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ১৭ টি এটিএম কার্ড, ৬ টি মোবাইল সহ ২০ হাজার নগদ টাকা।  এও জানা গিয়েছে, অতীতে অসমের তিনটি জায়গাতেও একই কায়দায় প্রতারণা চালিয়েছিল অভিযুক্তরা।

পুলিশ সুত্রে খবর, তিন দিন আগে অসমের নম্বর প্লেট লাগানো একটি গাড়িতে করে প্রথমে বিহারের মতিহারীর একটি ব্যাঙ্কে প্রতারণার ছক কষে দুষ্কৃতীরা। সেই মতো স্থানীয় একটি হোটেলে আস্তানা নেয় ওই পাঁচ অভিযুক্ত।  কিন্তু পরে পরিকল্পনার পরিবর্তন করে প্রতারণার জন্য আলিপুরদুয়ার জেলাকেই বেছে নেয় তারা। জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাগরাজ দেবারাকোন্ডা জানান, “সোমবার জয়গাঁ ও হাসিমারা এলাকায় প্রতারনার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার শহরের তিন জায়গা থেকে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের কাছে থেকে নগদ টাকা , এটিএম কার্ড, মোবাইল ও একটি চার চাকার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”

*কিন্তু কিভাবে প্রতারণা  চালাতো দুষ্কৃতীরা?

প্রথমে নির্দিষ্ট কোন ব্যাঙ্কে গিয়ে সেই ব্যাঙ্কের গ্রাহক, যারা বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করতে এসেছে, তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকা কমিশন দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হতো। গ্রাহকরা রাজি না হলেই তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হতো দুটি নকল টাকার বান্ডিল।  প্রলোভনে পা দিলেই গ্রাহকদের আসল টাকা নকল টাকার বিনিময়ে পরিবর্তন করে নিতেন প্রতারকরা। আর তারপর গ্রাহকরা ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করতে গেলে যখন জানতে পারতেন যে তারা প্রতারিত হয়েছেন, ততক্ষণে সেই স্থান থেকে চম্পট দিত দুষ্কৃতীরা। এই ভাবে কারও কাছ থকে ২ লাখ আবার কারও কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতারণা করা হতো।

অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা করে। শুরু হয় ছবি সহ তথ্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়া। তারপরই মেলে সাফল্য। ইতিমধ্যেই ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে জয়গাঁ থানার পুলিশ।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর