মাধব দেবনাথ, নাদিয়াঃ নুন আনতে পান্তা ফুরায়। অভাবের সংসারে স্বভাব নষ্ট হয়নি। ৪০ হাজার টাকা মূল্যের সোনার আংটি কুড়িয়ে পেয়েও তা ফিরিয়ে দিলেন দরিদ্র বিশ্বজিৎ বর্মন। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল শান্তিপুর পঞ্চানন তলা এলাকায়।

সোনার আংটি ব্যাকা হলেও তার দামটি কিন্তু সোনার মতোই। অথচ এমনই দামি একটি সোনার আংটি কুড়িয়ে পেয়েও হেলায় তা ফেরত দিলেন ক্লাস ওয়ানের একটি ছোট্ট মেয়ে। কোনও ছবি তোলা বা প্রচার পাওয়ার জন্য নয়। নেহাতই পারিবারিক সংস্কারের বসে নিতান্তর নির্লভ হয়ে ৪০ হাজার টাকা দামের সোনার আংটি ফেরালো নদীয়ার শান্তিপুরের দরিদ্র বর্মন পরিবারের মেয়ে বিজিতা। প্রায় অভাবনীয় এই ঘটনায় একই সঙ্গে গর্ব আর শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়।

বেজ পড়ার মাঠের পাশে ছিটে বেড়ার ঘরে থাকে দরিদ্র বর্মন পরিবার। তাঁতিদের হাতে তৈরি শান্তিপুরের তাঁতের শাড়িতে মার দিয়ে যেটুকু রোজগার হয় তাতে ভালোভাবে দিন কাটে না। সারাদিনের পরিশ্রমের পর বাড়িতে এলে স্ত্রী পার্বতী বর্মন তাকে এই সোনার আংটি টা দেখান। জানান, ক্লাস ওয়ান এ পড়া তাদের ছোট্ট মেয়ে বিজিতা বর্মন বিকেলে মাঠে খেলতে গিয়ে ঘাসের আড়াল থেকে কুড়িয়ে পেয়েছিল। চকচকে এই আংটি নিয়ে ছোট্ট বিজিতা সোজা ছুটে আসে মায়ের কাছে।মায়ের হাতে তুলে দিয়ে গোটা ঘটনাটা জানায় সে। তারপরেই বর্মন দম্পতি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মৃত্যুঞ্জয় হালদারের ছেলের হাতে থাকা সোনার আংটি হারিয়ে গেছে।

অন্যদিনের মতো এদিনও মাঠে খেলতে এসেছিল ক্লাস নাইনের সায়ন। তার হাতেই ছিল এই আংটি। খেলতে গিয়ে কোনোক্রমে হাত থেকে পড়ে যায় সেটি। বাড়িতে গিয়ে মা সোমা হালদার ও বাবা মৃত্যুঞ্জয় হালদার কে, সবটা জানাতে খোঁজ খোঁজ রব পড়ে চারিদিকে। এরমধ্যেই তার সঙ্গে দেখা করে সোনার আংটিটি ফিরিয়ে দিলেন বিশ্বজিৎ বর্মন।
দরিদ্র পরিবার হয়েও তাদের এই মানবিকতা দেখে বিস্মিত মৃত্যুঞ্জয় হালদার। সোনার আংটি হাতে পেয়ে ওই দরিদ্র পরিবারকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।

সংসারে অভাব অনটন। সারাদিনরাত পরিশ্রম করতে হয় তাদের, কিন্তু অন্যের জিনিসের প্রতি লোভ নেই। সেই শিক্ষাই তারা দিতে চান ছোট্ট মেয়েকেও। বিজিতার মা-বাবা জানিয়েছেন, তাদের সন্তান যাতে আগামী দিনে সঠিক পথে পরিচালিত হয় সেই দিকেই লক্ষ্য তাদের।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর