ব্যুরো নিউজ, ৭ ফেব্রুয়ারি :পশ্চিমবঙ্গের 20২৫-২৬ অর্থবছরের রাজ্য বাজেট পেশ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার। এটি হবে তৃতীয় তৃণমূল কংগ্রেস তথা তৃতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট, কারণ আগামী ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে এবারের বাজেট নিয়ে রয়েছে প্রবল প্রত্যাশা। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে, এবারের বাজেটে কী কী নতুন ঘোষণা করা হবে এবং সেই সিদ্ধান্তগুলি বিধানসভা নির্বাচনে কীভাবে প্রভাব ফেলবে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) থেকে রাজ্য বিধানসভা অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছেন, এবং দুই দিনের মধ্যেই অর্থাৎ ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাজেট পেশ করা হবে।
মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট
এটি মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট, তাই বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে এবারের বাজেট। ২০২৬ সালে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট বা ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ করা হবে, যা একটি প্রাক নির্বাচনী বাজেট হিসেবে বিবেচিত হবে। তাই এবারের বাজেটের প্রস্তাবনা এবং ঘোষণাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এবারের বাজেটে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে, মমতা সরকার কি কোনো বড় চমক ঘোষণা করবেন, বিশেষ করে সামাজিক প্রকল্পগুলির দিকে। একাংশের ধারণা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, বিধবা ভাতা, বাংলার বাড়ির মতো প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া নতুন কোনো সামাজিক প্রকল্পও ঘোষণা হতে পারে, যা আগামী নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সুবিধা দিতে পারে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস যে সাফল্য অর্জন করেছিল, তার পেছনে মহিলাদের ভোট বড় ভূমিকা পালন করেছিল। বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পেরও বিশেষ অবদান ছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, মমতা সরকার এবারও তাদের বাজেটে কিছু চমক দিতে পারে, যাতে ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।এছাড়া রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বাড়ানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে। গত দু’বারের বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছিল। এবারও তাদের আশায় বুক বাঁধা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা যেখানে ৫৩% ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা মাত্র ১৪% ডিএ পান।
প্রেমিকাকে ভালবাসি বলতে বুক দুরুদুরু করে, কিন্তু সেই কাজ সহজ করে দেয় একটি গোলাপ
এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাদের দাবি, এবার বাজেটে ডিএ বাড়ানো হোক। কিছু কর্মচারী এই দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন, এবং তাদের মতে, আন্দোলনের মাধ্যমে চাপ তৈরি করা গেলে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।রাজ্য বাজেটের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেখানে নির্বাচনী পরিপ্রেক্ষিত এবং সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রাখতে হবে। এই বাজেটের ফলে রাজ্য সরকারের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, সেটি অনেকাংশেই নির্ভর করবে।