ব্যুরো নিউজ,২৮ জানুয়ারি :আজকাল অনেকেই কম বয়সে হাঁটু বা কোমরে ব্যথার সমস্যায় ভুগছেন, আর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারছেন শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কথা। ভিটামিন ডি শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে, এবং এটি শুধুমাত্র হাড়ই নয়, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সার্বিক সুস্থতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়াম শোষণের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, অধিকাংশ মানুষের মধ্যে এর ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
বিশাল স্বাস্থ্য উপকারিতায় ক্যামেল মিল্কঃ জানুন এর চমকপ্রদ উপকারিতা!
ভিটামিন ডি-এর উৎস এবং সূর্যের ভূমিকা
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতি মিলিলিটার রক্তে ২০ ন্যানোগ্রাম ভিটামিন ডি থাকা প্রয়োজন। যদি তার চেয়ে কম থাকে, তাহলে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি তৈরি হয়, যা হাড়ের শক্তি এবং সাধারণ স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই ঘাটতি কেন হচ্ছে?
ভিটামিন ডি-এর অন্যতম প্রধান উৎস হলো সূর্যালোক। সূর্যের আলো থেকে ৮০% ভিটামিন ডি শরীরে উৎপন্ন হয়। তবে, ভারতে যেখানে বছরের অধিকাংশ সময়েই প্রচুর সূর্যালোক পাওয়া যায়, সেখানে কেন মানুষ ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন? একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের শহরতলি এবং গ্রামীণ এলাকায়, বহু মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, উত্তর ভারতে প্রাপ্তবয়স্কদের ৯১.২% এবং পঞ্চাশোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এই ঘাটতির পরিমাণ আরও বেশি, ৯৪%।
স্বাস্থ্যকর বিরিয়ানিঃ রোজ খেলেও বাড়বে না ওজন, শরীর থাকবে ফিট
ভিটামিন ডি-এর অভাবের কারণ
ভিটামিন ডি উৎপাদন নির্ভর করে ত্বকের উপর সূর্যের আলো পড়ার উপর। কিন্তু, অনেকেরই কাজের ব্যস্ততার কারণে সূর্যের আলোতে বাইরে বেরোনোর সময় হয় না। বিশেষ করে যারা অফিসে দীর্ঘসময় বসে কাজ করেন, তাদের শরীরে যথেষ্ট সূর্যালোক পৌঁছায় না। এছাড়া, শীতকালে সূর্যের তাপ কম থাকে এবং দূষণের কারণে অনেক সময় সূর্যের রশ্মি ত্বকে ঠিকভাবে পৌঁছায় না। এছাড়াও, ত্বকের মেলানিনের পরিমাণও ভিটামিন ডি সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখে; মেলানিনের পরিমাণ বেশি হলে ভিটামিন ডি উৎপাদনও সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
‘ডার্ক’ চকোলেট খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? কি বলছেন পুষ্টিবিদরা?
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে কী করবেন?
- মাছ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, পমফ্রেট, বা সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়া কাতলা, ইলিশও ভাল বিকল্প।
- দুধ এবং দুধজাত পণ্য: প্রাণিজ দুধ এবং উদ্ভিজ পণ্য থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। দুধ এবং দই নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস রাখুন।
- মাশরুম: সি-টেক, মেইটেক জাতীয় মাশরুমে ভিটামিন ডি রয়েছে, যা খাবারের তালিকায় যোগ করা যেতে পারে।
- ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট: আপনি চাইলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ক্যাপসুল বা ট্যাবলেটও গ্রহণ করতে পারেন।
এছাড়াও, সকাল বেলা কিছুটা সময় রোদে হাঁটলে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণে সহায়তা করতে পারে।