ব্যুরো নিউজ,১২ ফেব্রুয়ারি :রাস্তার ধারে ফুটপাতে ছোট্ট টেবিলের ওপর স্টোভ জ্বালিয়ে চপ ভাজছেন কিছু যুবক-যুবতি, এবং ঝাল-মুড়ি তৈরি করছিলেন কয়েকজন যুবক-যুবতি। এই স্টলটি ছিল একদিনের ‘বেকার মেলা’। চম্পাহাটির উমা মণ্ডল, কাশ্মীরা খাতুনেরা আলুর চপ ভাজছিলেন, পার্থ কর্মকার ঝালমুড়ি তৈরি করছিলেন, এবং পাশের টেবিলেই চা তৈরি করছিলেন ইসরাফিল শেখ। এঁরা কেউ চপ-মুড়ি বা চা বিক্রেতা নন, বরং তাঁরা সকলেই টেট পাশ করা চাকরিপ্রার্থী। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ফল প্রকাশিত হলেও, এখনো নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি এবং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ফলে, বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে করতে হতাশ হয়ে তাঁরা এই অভিনব প্রতিবাদ শুরু করেছেন।
‘বেকার মেলা’
এ দিন বিকাশ ভবনের কাছেই তাঁরা এক দিনের জন্য এই স্টল খোলেন, যার নাম দেওয়া হয় ‘বেকার মেলা’। বিদেশ গাজি নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমরা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘চাকরি না পেলে চপের দোকান দেবে’। তাঁর কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা চপ-মুড়ির দোকান খুলেছি, কারণ বেকারত্বের জ্বালায় আমরা ভুগছি।”
এদিনের এই ‘বেকার মেলা’-য় অংশ নিতে বিভিন্ন জেলা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা এসে ছিলেন। এক চাকরিপ্রার্থী, পার্থজিৎ বণিক বলেন, “গৌতম পাল, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি বলেছিলেন যে ৫০ হাজার শূন্য পদ রয়েছে এবং প্রতি বছর পরীক্ষা হবে, নিয়োগ হবে। মুখ্যমন্ত্রীও বলেছিলেন যে ১০ লক্ষ শূন্য পদ রয়েছে। এখন এই প্রতিশ্রুতিগুলি কবে পূর্ণ হবে?”
এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার জানান, “সুপ্রিম কোর্টে অনগ্রসর শ্রেণি সংক্রান্ত একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে, যার কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার থেকে শূন্য পদের সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না। শূন্য পদের সংখ্যা পাওয়া গেলেই, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে।”এই প্রতিবাদী স্টলটি শুধু চাকরির প্রতি তাঁদের ক্ষোভের প্রকাশ নয়, বরং এক ধরনের সামাজিক আন্দোলনও যেখানে চাকরিপ্রার্থীরা তাঁদের অধিকারের দাবি তুলছেন।