ব্যুরো নিউজ,২২ আগস্ট: আরজিকর কান্ডে সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবার ছিল শুনানির দ্বিতীয় দিন। এই শুনানিতে রাজ্য সরকার এবং পুলিশ শীর্ষ আদালতে রীতিমত ভর্ৎসনার শিকার হয়েছে। শীর্ষ আদালতের তরফে আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ রাজ্য সরকার
শুরুতেই বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয়। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এই স্ট্যাটাস রিপোর্টটি পড়েন। তারপরেই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, অভিযুক্তর মেডিক্যাল রিপোর্ট কোথায়? রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, কেস ডায়েরির অংশ সেটা। সেখানেই রিপোর্ট রয়েছে।সলিসিটর জেনারেল সিবিআই এর পক্ষ থেকে বলেন, এই ধরনের কোনো রিপোর্ট আছে, আমরা সেটা জানতাম না। ঘটনার ৫ দিন পরে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছাই তখন সব বদলে গিয়েছে। যদিও রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল কিছুই বদল করা হয়নি বলে দাবি করেন। পাল্টা সলিসিটর জেনারেল বলেন, এই মামলায় সবথেকে হতবাক করে দেওয়ার মত বিষয় হলো, মৃতদেহ দাহ করার পরে রাত ১১ঃ৪৫ মিনিটে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মৃত চিকিৎসকের সহকর্মী এবং সিনিয়ররা গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফির দাবি জানিয়েছিলেন। তার কারণ তারা মনে করেছিলেন সেখানে কিছু একটা লুকানোর চেষ্টা করা হবে।সলিসিটর জেনারেল সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের প্রাক্তন সুপার আখতার আলীর সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন সেই বিষয়টি সম্বন্ধে জানান।
যা জেনেছি, পরে বলবো সিলবন্ধ খামে মুখ্যমন্ত্রীকে সেই তথ্য পাঠাচ্ছেন রাজ্যপাল
রাজ্য আদালতে জানিয়েছে, আরজিকরের চিকিৎসকের Postmortem হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে। আর এরপরেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পাদ্রীওয়ালা বলেন, এ তো খুবই আশ্চর্যজনক। ময়নাতদন্তের আগেই রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেল। ভেবেচিন্তে সঠিক মন্তব্য করুন। আলটপকা কিছু বলবেন না। এরপরে একজন দায়িত্ববান পুলিশ অফিসারকে সঙ্গে রাখবেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, ময়নাতদন্তের পরেও কি পুলিশ জানতো না এটা অস্বাভাবিক মৃত্যু? তাহলে রাত ১১ঃ৪৫ মিনিটে FIR রুজু হয় কেন? রাজ্য জানায়, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ডায়েরি সকাল ১০:১০ মিনিটে হয়েছিল।
কি চলছে বাংলায়?সিবিআই জেরার মধ্যেই সন্দীপকে নতুন দায়িত্ব মমতার,ফের অধ্যক্ষ বদল আরজি করে
সুপ্রিম কোর্ট তারপরেই প্রশ্ন করে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ডায়েরি যদি ১০টা ১০ মিনিটে হয়, তাহলে ক্রাইম সিন রাত ১১ঃ৪৫ মিনিটে সিল করা হলো কেন? বিচারপতি পাদ্রীওয়ালা বলেন, আমার ৩০ বছরের কর্মজীবনে এরকম পদ্ধতি দেখিনি, যেটা আপনার রাজ্যে অনুসরণ করা হয়েছে। এটা কি সত্য যে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ডায়েরী রেকর্ড করা হয়েছিল? আর দ্বিতীয়ত: এই নন মেডিক্যাল সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট কে? তার আচরণ যথেষ্ট সন্দেহজনক। কেন এমন আচরণ তিনি করলেন? প্রসঙ্গত: সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর মামলার দ্বিতীয় শুনানির দিন রাজ্য সরকার, পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন ভূমিকা নিয়ে একের পর এক কড়া প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে গিয়েছে রাজ্য।