ব্যুরো নিউজ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : গতকাল রবিবার ভারতের লক্ষ লক্ষ মানুষ এবং সারা বিশ্বের আকাশপ্রেমীরা ‘ব্লাড মুন’ বা পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখতে একত্রিত হয়েছিলেন। লাদাখের শান্ত উপত্যকা থেকে শুরু করে তামিলনাড়ুর উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত, মানুষজন এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। ২০১৮ সালের পর ভারতে এই প্রথম এমন বিরল চন্দ্রগ্রহণ দেখা গেল, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে।
চন্দ্রগ্রহণ কী?
‘ব্লাড মুন’ নামে পরিচিত পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ঘটে যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে এবং সূর্যের আলোকে আংশিকভাবে অবরুদ্ধ করে। এই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে শুধুমাত্র লাল রঙের আলোই চাঁদের পৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে। এর ফলে চাঁদকে দেখতে লালচে বা তামাটে রঙের দেখায়, যা এক অসাধারণ দৃশ্যের সৃষ্টি করে। জ্যোতির্বিজ্ঞান উৎসাহী এবং পেশাদার উভয়ই এই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য বিভিন্ন মানমন্দির, ছাদ এবং খোলা মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন।
মহাকাশে কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ ঘটাল ESA: সফল হল ISRO-র সহযোগিতায় !
কবে আবার দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ?
রবিবারের এই চন্দ্রগ্রহণ ছিল ভারতে দৃশ্যমান দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ, যা ২০২২ সাল থেকে প্রথম এবং ২৭ জুলাই, ২০১৮-এর পর থেকে সমগ্র ভারতে প্রথম দেখা যায়। পরের ‘ব্লাড মুন’ বা পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ভারতে ২০২৮ সালের ৩১শে ডিসেম্বর দৃশ্যমান হবে। এই গ্রহণ পূর্ণিমাতে ঘটেছে যাতে পৃথিবীর ছায়ায় গোটা দৃশ্যমান চন্দ্র ঢাকা পড়েছে।
কুসংস্কার ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ
গ্রহণ একটি বিরল ঘটনা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, চন্দ্রগ্রহণ শুধুমাত্র একটি ছায়া জনিত ঘটনা এবং এর ফলে মানুষ বা পশুপাখির কোনো ক্ষতি হয় না। আর্যভট্টের সময় থেকেই এই ঘটনাটি বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাই চন্দ্রগ্রহণের সময় বাইরে যাওয়া বা খাওয়া-দাওয়ায় কোনো ঝুঁকি নেই। এর পরও কিছু ভুল ধারণা ও কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অনেকে বিশ্বাস করেন যে চন্দ্রগ্রহণের সময় খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা বা বাইরে বের হওয়া উচিত নয়, কারণ এতে “বিষক্রিয়া” বা “নেতিবাচক শক্তি” থাকতে পারে। কেউ কেউ এমনকি বিশ্বাস করেন যে এই ঘটনা “গর্ভবতী মহিলাদের এবং তাদের অনাগত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর”। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই ধরনের ধারণাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মনে করেন।