কুম্ভ মেলা

ব্যুরো নিউজ, ২৭ জানুয়ারি:ভারতের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য এক বিশাল রঙিন পরিসরে ছড়িয়ে আছে, যেখানে হিন্দু উৎসবগুলো এবং ধর্মীয় সমাবেশগুলো সমাজের একতা ও শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের নানা প্রান্তে ভারতের ভাবমূর্তি তুলে ধরেছে, কিন্তু সম্প্রতি এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলো ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ২০২৫ সালের ১২ জানুয়ারি, তাপতি-গঙ্গা এক্সপ্রেস, যা মহাকুম্ভে পিলগ্রিমদের নিয়ে যাচ্ছিল, সেটি মহারাষ্ট্রের জলগাঁও এলাকায় পাথরবৃষ্টির শিকার হয়। এই হামলা এক ভয়াবহ সংকেত, যা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আক্রমণের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে এবং এটি একতার এবং শান্তির পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

কলকাতার এক্সাইড মোড়ে বিপজ্জনক হেলে পড়া বাড়ি ঘিরে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক

তাপতি-গঙ্গা এক্সপ্রেসের হামলা: নতুন এক নজির

তাপতি-গঙ্গা এক্সপ্রেসের উপর হামলা ছিল এক ধরনের ভয়াবহ আক্রমণ যা ভারতের ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা ও শান্তিপূর্ণ উৎসবগুলোর উপর ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। মহাকুম্ভ, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় আধ্যাত্মিক সম্মিলন, সেখানে কোটি কোটি মানুষ একত্রিত হন। তাপতি-গঙ্গা এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা থেকে যাত্রীরা তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন, এবং এতে ভুক্তভোগীরা জানান, যদি কাঁচ ভেঙে যেত, তবে অনেক যাত্রী গুরুতর আহত হতে পারতেন। এরকম হামলা শুধু এই একটি ঘটনা নয়, ২০২৪ সালে অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবেও এরকম হামলা দেখা গেছে, বিশেষত যেখানে রেলপথের আশপাশে অবৈধ দখল রয়েছে।

এমন হামলার বেড়ে যাওয়া প্রবণতা

জলগাঁওয়ে তাপতি-গঙ্গা এক্সপ্রেসে পাথর হামলার ঘটনা ভারতের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া আরও কিছু মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতি উসকে দেয়। ২০০২ সালে গোধরা ট্রেন দহন কাণ্ডের মতো বড় ঘটনাও ঘটে ছিল, যেখানে ৫৯ জন কারসেবক প্রাণ হারান। এখন হিন্দু ধর্মীয় উৎসবগুলো প্রতি বছরই পাথর ছোঁড়া, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে রাম নবমী, হানুমান জয়ন্তী, দুর্গা পূজা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালে, বাহরাইচে এক যুবককে হিন্দু শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, যা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এসব সহিংসতার ভয়াবহতা।

পাকিস্তানে বিতর্কিত সোসাল মিডিয়ায় আইন পাসঃ বাকস্বাধীনতার ওপর নতুন হুমকি

রাজনৈতিক সমঝোতা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা

হিন্দু ধর্মীয় উৎসবগুলোর উপর বাড়তে থাকা সহিংসতার পেছনে রাজনৈতিক সমঝোতা ও ভোটব্যাংক রাজনীতির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। অনেক রাজ্যে ভোটব্যাংক রাজনীতি চালানোর জন্য কিছু সরকার হিন্দু ধর্মীয় উৎসবগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যা বিরক্তিকর উপাদানগুলোকে উসকে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ২০২২ সালের দুর্গা মূর্তি বিসর্জন নিষেধাজ্ঞা, যা মহররমের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল, তার একটি বড় উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।

জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি

এছাড়া, রেললাইনের পাশে অবৈধ দখল, বিশেষ কিছু সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা, এই সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। এসব এলাকা শুধু অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা নয়, বরং এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সমাজিক শান্তির জন্যও বড় ধরনের হুমকি। এসব জায়গায় অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ছে, এবং এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।

কিঞ্জল নন্দের বিরুদ্ধে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের চিঠিঃ চাপে অভিনেতা-চিকিৎসক

ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মহাকুম্ভ, যা ভারতের একতার এবং বিশ্বাসের মহান চিহ্ন, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষদের আকর্ষণ করে। তবে, এসব ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে হামলা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় একতার উপর সরাসরি আক্রমণ। এসব হামলা কেবলমাত্র এককভাবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর হামলা নয়, বরং এটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র এবং জাতিগত একতাকে ভেঙে ফেলার এক উদ্যোগ। আমাদের উচিত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য অটুট থাকে এবং এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ হয়।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর