RATH AND ROSOGOLLA CONECTION

লাবনী চৌধুরী, ৭ জুলাই: ভোজন রসিক বাঙালির কাছে রথ যাত্রা মানেই রথের রশিতে টান আর সঙ্গে গরম গরম জিলিপি আর পাঁপড় ভাজা। তবে শুধু জিলিপি আর পাঁপড়ই নয়, রথের সঙ্গে যোগ রয়েছে বাঙালির প্রিয় মিষ্টি রসগোল্লারও। এই রসগোল্লা খাইয়েই লক্ষ্মীর মানভঞ্জন করেছিলেন জগন্নাথ স্বয়ং।

‘ওঁ নমঃ শিবায়’ এই মন্ত্রেই মিলবে ফল

স্নান উৎসবের পর তিন ভাই বোনের ধুম জ্বর। দীর্ঘ সময় অসুস্থতার পর মন ও শরীর দুইই চাঙ্গা করতে বোন সুভদ্রা ও দাদা বলভদ্রকে সঙ্গে নিয়ে রথে চেপে মাসির বাড়ি আসেন জগন্নাথ। টানা আট দিন মাসি গুণ্ডিচার কাছেই আদর-যত্নে কাটান দিন। এরপর ফের রথে চেপেই ফিরে আসার পালা। তবে এসবের মধ্যেই জগন্নাথ বাধিয়ে ফেললেন আরেক গোল!

মাসির বাড়িতে ভাই-বোনকে সঙ্গে নিয়ে এলেও, নিয়ে আসেননি স্ত্রীকে। আর এতেই দেবী মহালক্ষ্মীর ভারী অভিমান। স্বামী কিনা গেলেন মাসির বাড়ি, সঙ্গে নিয়ে গেলেন বলভদ্র, সুভদ্রাকে। শুধু কিনা নিতে ভুলে গেলেন স্ত্রীকে? সঙ্গে করে ফল- মূল, দধি- মিষ্টান্ন সবই নিলেন। কিন্তু, তাঁর পছন্দের একটা খাদ্য-সামগ্রীও রেখে গেলেন না, সঙ্গে করে লাল শাক টুকুও নিয়ে গেলেন। আর এতেই মহালক্ষ্মীর মান ভাঙ্গায় কে!

RATH AND ROSOGOLLA CONECTION

এদিকে মাসির বাড়িতে জগন্নাথ তো দিব্য রয়েছেন, খাচ্ছেন- দাচ্ছেন, আদর-যত্ন পাচ্ছেন। অন্যথায় মহালক্ষীর কি অবস্থা? তিনি তো নাওয়া-খাওয়া ভুলে একা একা শ্রীমন্দিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে এরই মধ্যে মনের দুঃখেই একদিন রাতেই চুপি চুপি তিনিও চলে যান মাসি গুন্ডিচার বাড়ি। সেখানে গিয়ে প্রভু জগন্নাথের সাজ- সজ্জা, আদর-যত্ন দেখে মনে মনে যথেস্টই খুন্ন হন লক্ষী। তাতে কার কি বা যায় আসে! তাই ‘ঠেলা’ বোঝাতেই ফিরতি পথে স্বামীর রথের একাংশ দিলেন ভেঙে।

এদিকে এতদিনে মাসির বাড়ি থেকে ফেরার সময় হয়েছে। সেই মত তৈরি তিন ভাই বোনের রথও। সব ঠিকঠাকই চলছে। মাসির বাড়ি থেকে ফিরেও এসেছেন জগন্নাথদেব। কিন্তু যেই না তিনি মূল মন্দিরে প্রবেশ করতে যাবেন ওমনি বাধা। বলরাম ও সুভদ্রা ভালোয় ভালোয় মন্দিরে প্রবেশ করলেও, জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলেই মুখের উপর দুম করে দরজা বন্ধ করে দেন স্বয়ং লক্ষ্মী।

মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে লক্ষ্মীর মানভঞ্জন করতে হবে যে! মান না ভাঙালে কেনই বা জগন্নাথকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেবেন তিনি? ভারী না একা ফেলে চলে গিয়েছিলেন স্বামী, এখন কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব বুঝে নিতে লক্ষ্মীই বা ছাড়বে কেন?

স্ত্রীর রাগ ভাঙ্গাতেই এক হাঁড়ি রসগোল্লার আয়োজন করেন জগন্নাথ। ভাবেন, যদি এই সুস্বাদু মিষ্টান্নের কল্যাণে অন্তত দেবী লক্ষ্মীর মান ভাঙানো যায়, তবেই অন্তত মানে মানে শ্রীমন্দিরের প্রবেশ করা যাবে। আর জগন্নাথের সেই বুদ্ধিবলেই হল কার্যসিদ্ধি। স্বামীর প্রিয় মিষ্টতেই মন গোলে গেল দেবী লক্ষ্মীর।

তবে দেবীর রাগ ভাঙানো এতোটাও সহজ হয়নি। মন্দিরের বাইরেই কাটাতে হয়েছিল তিনটে দিন। দেবীর রাগের কারনেই শ্রীমন্দিরের সামনে তিনদিন ধরে রথের উপরেই বসে ছিলেন জগন্নাথ। আর এখনও এই তিনদিন পুরীর মন্দিরের সামনে রথে বসেই জগন্নাথের লীলা অনুষ্ঠান হয়। রথযাত্রার শেষদিনে আজও রসগোল্লা ভোগ দেওয়া হয় জগন্নাথদেবকে।

BJP Helpline

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর