ব্যুরো নিউজ ১৮ জুলাই ২০২৫ : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রচারে ঝাঁজ বাড়াতে আজ দুর্গাপুরে জনসভা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সফরের ঠিক আগেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ (আগের টুইটার) দুটি পোস্ট করে তিনি একদিকে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অপশাসনের’ তীব্র সমালোচনা করেছেন, তেমনই কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক—উভয় উদ্দেশ্যেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূলের সমালোচনা ও বিজেপির উন্নয়নের অঙ্গীকার
একটি পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদী পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেছেন, “তৃণমূলের অপশাসনে ভুগছে পশ্চিমবঙ্গ। সেখানকার মানুষ বিজেপিকেই ভরসা করছেন। মানুষ জানেন, বিজেপি-ই একমাত্র উন্নয়ন আনতে পারে।” এর সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, “আজ, ১৮ জুলাই, আমি দুর্গাপুরে বিজেপির সভায় ভাষণ দেব। আপনারা সকলে আসুন!”
অপর একটি বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরের পেছনের উন্নয়নমূলক উদ্দেশ্যটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আজ ১৮ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মাঝে থাকতে উদগ্রীব। দুর্গাপুরে একটি অনুষ্ঠানে ৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করা হবে। এই প্রকল্পগুলি তেল ও গ্যাস, বিদ্যুৎ, রেল এবং সড়ক ক্ষেত্রকে কভার করে।”
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি
আনুষ্ঠানিক সূচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুপুর ২টো ৩৫ মিনিট নাগাদ অণ্ডাল বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা। সেখান থেকে তিনি সড়কপথে দুর্গাপুরের জনসভা স্থলে যাবেন, যেখানে প্রশাসনিক অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য দুটি পৃথক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
প্রশাসনিক অনুষ্ঠানটি দুপুর ৩টে থেকে ৩টে ৩০ মিনিট পর্যন্ত হওয়ার কথা, যেখানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। তাঁর রাজনৈতিক ভাষণ দুপুর ৩টে ৪৫ মিনিট থেকে ৪টে ১৫ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৫টায় প্রধানমন্ত্রী অণ্ডাল বিমানবন্দর হয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন।
দুর্গাপুরে সাজ সাজ রব
প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে দুর্গাপুরে ব্যাপক প্রস্তুতি ও উন্মাদনা লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার সকাল থেকে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বাড়ি বাড়ি ঘুরে মানুষকে সভায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বর্তমান রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, সৌমিত্র খাঁ, জ্যোতির্ময় মাহাতো-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারাও দুর্গাপুরে উপস্থিত রয়েছেন। শমীক ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবারও বাড়ি বাড়ি প্রধানমন্ত্রীর জনসভার কার্ড বিতরণ করেছেন।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন
যদিও রাজ্য সরকারের ক্ষমতায় থাকা এবং একসময়ের এনডিএ শরিক তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি যে এনডিএ-র বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাঙালি বিদ্বেষী এবং পশ্চিমবঙ্গকে বহু ক্ষেত্রে বঞ্চিত রেখেছেন। তবে বাস্তব হলো, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজের রাজনৈতিক সুবিধা দেখেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলো অনুমোদন করে এবং যথেচ্ছ সেই প্রকল্পের অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন খাতে। সুতরাং ব্যয়ের অঙ্কের কোনো রিপোর্ট বা ফিডব্যাক রাজ্য সরকার থেকে না পাওয়ার ফলে, রাজ্যে প্রকল্পগুলির অর্থায়ন করা কেন্দ্রের পক্ষে জটিল হয়ে উঠেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গে একটি দায়িত্বশীল সরকার স্থাপনে উদ্যোগী। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা এবং উদ্বেগ, তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার!