প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, ৮ ফেব্রুয়ারি: দেশের পূর্বতন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামন। বৃহস্পতিবার সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে শ্বেতপত্রে প্রকাশ করে বলেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ (১) ও ইউপিএ (২) সরকারের কোনও সাহসী পদক্ষেপ ছিলনা। বরং এই সরকার নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরেছিল বলে অভিযোগ করেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি লোকসভায় বলেন তাদের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের মন্ত্রীরা তাদের কাজকর্ম শ্বেতপত্রের মধ্যে প্রকাশ করবেন। গত ৩১ জানুয়ারি পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ বাজেট তথা ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ ও তার আলোচনার সূত্রপাত করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এটাই সাংবিধানিক প্রথা। সেই প্রথা মেনেই ভোটের আগে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ওই বাজেটের সঙ্গে সংযুক্ত তালিকা পেশ করেন। সেখানে তিনি কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে বলেন, দশকের পর দশক সরকার চালিয়ে কংগ্রেস শুধু একের পর এক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল।
ওভার হেড বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে বন্দে ভারতে যাত্রী সমস্যা নিশ্চিত
সাফল্যের শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে বিজেপি
দেশে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতোই কংগ্রেসকে আক্রমণ শানাতে ছাড়েননি। আর সেটাই যে মোদী- শাহদের ট্রেটিজি হবে তা বলাইবাহুল্য। কংগ্রেস জমানা কতোটা খারাপ ছিল আর এনডিএ জমানা কতোটা ভালো তার ফিরিস্তি দেওয়াই এখন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের একমাত্র এজেন্ডা। কংগ্রেস অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, মোদী সরকারের ভোট অন অ্যাকাউন্ট তথা অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট নেহাতি সাদা-মাটা, দিশাহীন, নিয়োগ নিয়ে কোনও উল্লেখই নেই বাজেটে। বাজার অগ্নিমূল্য গরীব মানুষের রান্নাঘরের হাড়ি শিকেয় উঠতে বসেছে। সরকারী ক্ষেত্রগুলি বিলগ্নিকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার। সংকুচিত হচ্ছে রেল, ব্যাঙ্ক, বিমা ক্ষেত্রে চাকরীর সুযোগ। এসব ক্ষেত্রগুলি সমাজসেবা মূলক বলে মানুষ এতোদিন জেনে আসলেও, মোদী সরকার তার নতুন ব্যখ্যা দিচ্ছে। সব সমাজসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানকেই লাভজনক করতে শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। যদিও বিজেপি সেসবে আমলদিতে নারাজ।
মোদী সরকার ফলাও করে প্রচার করে চলেছেন দেশের জিডিপি অর্থাৎ আভ্যন্তরীণ অন্ন উৎপাদনের হার কতোটা বেড়েছে। বিদেশে ভারতের মর্যাদা কতো বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে ব্যবসা করতে কতো দেশ আগ্রহী। সেই সঙ্গে রয়েছে রাম মন্দির নির্মাণের মতো হাতে গরম সাফল্য। এই আসন্ন লোকসভা ভোটে মোদী এন্ড কোম্পানি হয় নিয়ে নিশ্চিত। তাদের লক্ষ্য, রাজিব গান্ধীর সময়ে লোকসভায় ৪০০ আসন পাওয়ার রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া। আর সেই অ্যাজেন্ডাকে সামনে রেখে সারা দেশে তাদের রাজনৈতিক শত্রু কংগ্রেসকে নানাভাবে আক্রমণ শানানোর ছক কষেছে বিজেপি। তারই অঙ্গ হিসাবে লোকসভায় ইউপিএ-র কড়া সমালোচনা করেছেন নির্মলা সিতারামন। কিন্তু, সেখানে একবারও উল্লেখ করেননি কীভাবে হিরে ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী মরেন্দ্র মোদীর মেহুলভাই তথা মেহুল চোকসী ও নিরব মোদীরা ব্যঙ্কে বিপুল টাকার ঋণ নিয়ে তা শোধ না করে বিদেশে পালিয়ে গেলেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কথা দিলেও আজও তারা অধরা। বরং জে ব্যঙ্ক থেকে তারা ঋণ নিয়েছিল সেটি বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেড ব্যঙ্কের সাথে মার্জার করা হয়েছে। ইভিএম নিউজ