ব্যুরো নিউজ,৩১ মার্চ: মায়ানমারে কয়েকদিন আগেই ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার ফলে দেশজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১৬০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যদিও অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভূমিকম্পের পরও মানুষের দুঃখ-কষ্ট শেষ হচ্ছে না, কারণ ঠিক এই সময়েও সেনাবাহিনীর বিমান হামলার কবলে পড়তে হয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত জনগণকে।
ভূমিকম্পের পরও কেন থামছে না হামলা?
মায়ানমারের সেনাবাহিনী, যা জুন্টা সরকার হিসেবে পরিচিত, দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরাঞ্চলের শান প্রদেশের নাউংচো শহরে বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে সাতজন নিহত হন। এছাড়াও, উত্তর-পশ্চিমের সাগাইং অঞ্চলের চ্যাং-ইউ শহরেও বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল।
দিল্লী নির্বাচন ২০২৫ সকাল ৯ টা পর্যন্ত ভোটের হার
রাষ্ট্রসংঘ এই হামলাকে ‘জঘন্য এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটির বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস বলেন, “যখন পুরো দেশ ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ সামলাতে ব্যস্ত, তখনও সেনাবাহিনী বিমান হামলা চালাচ্ছে—এটি অকল্পনীয় ও হৃদয়বিদারক।” এদিকে, মায়ানমারের উৎখাত হওয়া গণতান্ত্রিক সরকার, ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (NUG), ঘোষণা করেছে যে তাদের সশস্ত্র বাহিনী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দুই সপ্তাহের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে। তবে তারা জানিয়েছে, যদি জুন্টা বাহিনী হামলা চালায়, তবে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
মায়ানমারের শাসক দল বিপদে, মংডো দখলে আরাকান আর্মি
মায়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে সংঘাত—এই দুই বিপর্যয়ের মাঝে আটকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর উচিত মানবিকতার স্বার্থে সব সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করা। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জুন্টা সরকার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে কি না।