স্বপন দাস (চ্যানেল হেড EVM NEWS)
ব্যুরো নিউজ,১৯ নভেম্বর:ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে G-20 র বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি ঐতিহাসিক স্লোগানের ডাক দিয়েছেন। ওয়ান আর্থ ওয়ান ফ্যামিলি এন্ড ওয়ান ফিউচার এর স্লোগান কে তিনি সামনে রেখেছেন। অর্থাৎ গোটা বিশ্বকে একত্রিত করার জন্য তার এই আহ্বান G-20 র সামিটে খুবই প্রশংসিত হয়েছে। তিনি শুধু আহ্বান দিয়েছেন তা নয় কিভাবে এটা বাস্তবায়িত করা সম্ভব সেটাও তিনি উপস্থিত করেছেন ওই সামিটে। প্রসঙ্গত এই সামিটে ব্রাজিল ডাক দিয়েছে যে গোটা বিশ্বে ক্ষুধা এবং দারিদ্রতার বিরুদ্ধে জোট গড়ে তোলা হোক। অর্থাৎ গ্লোবাল আলায়েন্স এগেন্সট হাঙ্গার এন্ড পভার্টি ডাক দিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদী বলেন আমাদের বিশ্বের এই মুহূর্তের সব থেকে বড় সমস্যা, সংঘাত। বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথে এলাকার দেশ গুলিতে খাদ্য ও জ্বালানি এবং সারের যে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে তার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে এই অঞ্চলের দেশগুলি পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে তীব্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। আমরা যদি এই সংঘাতটা ক্ষুধা এবং দারিদ্রতার বিরুদ্ধে করি তাহলেই সারাবিশ্বে একটা ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
G-20 সামিট রিও ডি জেনেরিও
নরেন্দ্র মোদি এই প্রসঙ্গ আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন যে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট গুলির দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন আছে, এ কথা তিনি বলছেন কারণ বিশ্বের সমস্ত আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউশন গুলো কার্যত আমেরিকা এবং জি সেভেন গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে, ফলে আমেরিকা তার নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই যে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট গুলি কে ব্যবহার করে ফলে এই আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউশন গুলোকে সামনে রেখে কোন বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক ঐক্য গড়ে উঠছে না সেই কারণেই সম্ভবত নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিনি এই গ্লোবাল ইনস্টিটিউশনগুলো সংস্কারের কথা বলছেন। এতে গ্লোবাল ইনস্টিটিউশন গুলোর ওপর ভরসা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা সারা বিশ্বের সমস্ত দেশগুলির মধ্যে তৈরি হতে পারে তার ফলে ঐক্য গড়ে গোটা বিশ্বে। পাশাপাশি তিনি একথাও বলে দিতে ভোলেননি যে এই কাজটা তিনি অন্যদের বলছেন শুধু তাই নয় তিনি G-20 নিউ দিল্লি সামিটে আফ্রিকান ইউনিয়ন দেশগুলিকে G-20 র স্থায়ী সদস্য পদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে একটা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি তিনি তার নিজের দেশে ক্ষুধা ও দারিদ্রতার সঙ্গে কিভাবে লড়াই করছেন সেটাও তুলে ধরছেন।
মোদীর ব্রাজিল সফরে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকঃ বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা
মহিলা এবং যুবদের সরকারি উদ্যোগে উন্নয়ন প্রকল্পগুলি তুলে ধরেন। পাশাপাশি ভারতে শেষ ১০ বছরে আড়াইশো মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্রতা থেকে কিভাবে তুলে আনা হয়েছে এবং ৮০০ মিলিয়ন ভারতবাসীকে ফ্রি রেশন দিয়ে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা কিভাবে সুনিশ্চিত করা হয়েছে তা তিনি তুলে ধরেন। অর্থাৎ গোটা বিশ্বের কাছে নরেন্দ্র মোদি বার্তা দিতে চাইলেন যে তিনি যে কথাগুলি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বলছেন সেই কাজ তিনি নিজের দেশে এবং যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যেখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ রয়েছে সেই মঞ্চের গণতান্ত্রিকরণ করার প্রয়াস তিনি করছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতের দায়বদ্ধতার কথা তিনি তুলে ধরেছেন। বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতবর্ষ তার মানবতাবাদী সহায়তা দিয়ে চলেছে ‘মালই’ ,’জামলা’ আর ‘জিম্বাবোয়ে’র মত দেশগুলোকে। এক কথায় বলা যায় নরেন্দ্র মোদি দেশ থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার যে ভিশন সেই কথাগুলো তিনি যেমন উপস্থাপিত করছেন পাশাপাশি সেগুলোকেই তিনি তার নিজের ক্ষেত্রে কিভাবে বাস্তবায়িত করছেন সেগুলো বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে তুলে ধরছেন। এক কথায় জাতীয় রাজনীতি থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নরেন্দ্র মোদি যে বিশ্বগুরুর অবস্থান তৈরি করে ফেলছেন এটা তার প্রতিটা পদক্ষেপে প্রমাণ রেখে চলেছেন।