ব্যুরো নিউজ,১৪ জানুয়ারি:মকর সংক্রান্তির দিনে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পুণ্যস্নান। এই বছর, মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান উপলক্ষে ভারতীয় মেলাগুলির মধ্যে মহাকুম্ভ মেলা ও গঙ্গাসাগরের মেলার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের নির্ধারিত সূচি মেনে, ত্রিবেণী সংগমে প্রথম ‘অমৃত স্নান’ শুরু হয় শ্রী পঞ্চায়েতি আখাজডা মহানির্বাণী এবং শ্রী শম্ভু পঞ্চায়েতি অটল আখাড়ার সাধু-সন্ন্যাসীদের দ্বারা। তাদের পরেই, শ্রী পঞ্চায়েতি নির্মল আখাড়ার সাধুরা পুণ্যস্নান করবেন, যা ১৪ জানুয়ারি দুপুর ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চলবে।
‘অমৃত স্নান’
এ বছর উত্তরপ্রদেশ সরকার আশা করছে, মকর সংক্রান্তিতে রেকর্ড সংখ্যক পুণ্যার্থী ‘অমৃত স্নান’ করবেন। গঙ্গাসাগর মেলাতেও এমনই এক রেকর্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গঙ্গাসাগরে, সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫৫ লাখের বেশি পুণ্যার্থী পুণ্যস্নান করেছেন, এবং এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বিশ্বজুড়ে নানা দেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীরা মহাকুম্ভ মেলায় অংশ নিচ্ছেন। রাশিয়া, বেলজিয়াম, আমেরিকা, জার্মানির মতো দেশ থেকে বহু পুণ্যার্থী এখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন। বেলজিয়াম থেকে আসা এক মহিলা পুণ্যার্থী বলেছেন, “এখানে এসে খুব শান্তি লাগছে।” জার্মানি থেকে আসা থমাস নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, “আমি আধ্যাত্মিক শক্তি অনুভব করতে চাই।”মহাকুম্ভ মেলা ও গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের পাশাপাশি, সনাতন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বহু বিদেশি পুণ্যার্থী এখানে এসেছেন। রাশিয়ার প্রিয়মাদাসী নামে এক তরুণী বলেছেন, “আমরা সনাতন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি এবং আমরা মানুষকে আসল জীবন ও ধর্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।” এ ছাড়া, স্টিভ জোবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েলও আজ পুণ্যস্নান করার পরিকল্পনা করেছেন। তাঁর স্বামী কৈলাশনন্দ গিরি জানিয়েছেন, “তিনি খুব সরল মানুষ, একা গিয়ে স্নান করবেন।”
মকর সংক্রান্তিতে সূর্য উপাসনার বিশেষ তাৎপর্যঃ কি কি করলে পাবেন সম্মান
এদিকে, কলকাতায় মকর সংক্রান্তির দিন বিহু ও পোঙ্গল উৎসবও ধুমধাম করে উদযাপিত হচ্ছে। বিশেষ করে, কলকাতায় বসবাসরত অসম ও তামিলনাড়ুর মানুষরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখে বিহু ও পোঙ্গল উৎসব পালন করছেন। অনেকেই ২০ থেকে ৫০ বছর ধরে কলকাতায় বাস করছেন, কিন্তু তাঁদের উৎসব পালন করার ধরন একদম বদলায়নি।মহাকুম্ভ মেলা এবং গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করার সময়, এই উৎসবগুলির মাধ্যমে মানুষ একে অপরের সঙ্গে মিলিত হচ্ছে এবং আধ্যাত্মিক শান্তি লাভ করছে। সারা বিশ্বের পুণ্যার্থীরা এই ঐতিহ্য ও শান্তির মধ্যে নিজেদের জীবনের এক বিশেষ মুহূর্ত কাটাচ্ছেন।